প্রেমের উষ্ণতা যখন শরীরকে আলিঙ্গন করে তখনই জন্ম নেয় যৌনতা। এই যৌনতার মাত্রাতিরিক্ত ক্ষুধা মেটাতেই
অনেকে শিকার হয় রাক্ষুসে ভাইরাসের। যার নাম এইচ আই ভি। কামনার আগুনে ভাসতে গিয়ে কখন যে তীরে এসে তরী
ডুবে যায় তার খেয়াল স্বয়ং ব্রহ্মাও রাখেন না। তাই সচেতন হতে হবে নিজেকে। কারণ, মূলত সচেতনতার
অভাবেই এই মারণ রোগ থাবা বসায় শরীরের প্রতিটি রক্তের বিন্দুতে।
আজ ১লা ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবস। এই বিশেষ দিনকে সামনে রেখেই প্রত্যেক নাগরিকের উদ্দেশ্যে সচেতনতার বার্তা
পৌঁছে দেওয়া হল আমাদের সামাজিক কর্তব্য। এইব্যপারে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন বিশিষ্ট ডাক্তার আকাশ নীলভট্টাচার্য
(এইমস, নিউ দিল্লি)। তাঁর থেকে জেনে নেব এইচ আই ভি, এইডসের থেকে বাঁচার কিছু সংশ্লিষ্ট পথ-
১। রোগ-শোক আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত হলেও শোকের টোটকা আমাদের নাগেলের মধ্যেই থাকে।
কিন্তু, রোগের সব টোটকা ডাক্তারি বিদ্যা দিতে পারেনা। এইব্যপারে প্রথম দরকার সচেতনতা। এইচ আই ভি
হল এমনই এক ভাইরাস যা শরীর থেকে শরীরে ধাবিত হয়। যার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
নানান রোগের বাসা হয়ে ওঠে শরীর। জ্বর, ডাইরিয়া, চর্মরোগের মত নিত্যনতুন সমস্যা একেরপর এক জুড়তে থাকে।
এক্ষেত্রে, প্রথম সাবধানতা হল, সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হবার আগে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন।
একাধিক যৌন সঙ্গী থাকলে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করা ভাল। নিশ্চিন্ত যৌনতাকে অহেতুক প্রশ্রয় না দেওয়াই ভাল।
কারণ, একাধিক যৌন সংস্পর্শ ডেকে আনতে পারে এইচ আই ভির মত মারণ ভাইরাসকে।
২। এইচ আই ভি থেকে এইডসের যাত্রাপথ কিছুটা দীর্ঘ। এক্ষেত্রে, প্রথম থেকেই যদি সঠিক চিকিৎসা করানো যায় তবে
এই ভাইরাস নাগালে থাকে। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপির সাহায্যে এই ইনফেকশানকে বশে রাখা সম্ভব।
অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ড্রাগস এইচ আই ভির বিস্তারকে আটকাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই, রক্ত পরীক্ষা
করার পর যদি এইচ আই ভি পসেটিভ থাকে তৎক্ষণাৎ এর চিকিৎসা দরকার। দেরি করলে এটি এইডসে
পরিণত হতে পারে।
৩।গর্ভাবস্থায় এইচ আই ভি ধরা পড়লে প্রথম থেকেই চিকিৎসা প্রয়োজন। সঠিক চিকিৎসা করালে হবু সন্তানের শরীরে এর
থাবা বসার সম্ভবনা অনেকাংশে কমে যায়। শতকরা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ হবু সন্তানকে এই মারণ রোগ থেকে বাঁচানো
সম্ভব হয়।
৪।ওরাল সেক্স থেকে এইচ আই ভির জীবাণু সাধারণত ছড়ায় না। তবে, পাড়ার সেলুন বা ছুরি কাঁচি ব্যবহারের ক্ষেত্রে
হাইজেনিক থাকা ভাল। কারণ, এইচ আই ভির পথ হল রক্ত।
Facebook Comments