ঢাকায় একটু নিরিবিলি সময় কাটানোর জায়গা খুবই কম। রাজধানীতে এমনই একটি জায়গা তৈরি করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। বইয়ের সান্নিধ্যে এ জায়গায় ছেলে-বুড়ো সবাই সময় কাটাতে পারবেন। দেওয়া যাবে আড্ডা। সঙ্গে থাকবে চা-কফির ব্যবস্থাও।
নতুন এই উদ্যোগের নাম ‘বেঙ্গল বই’। এ আয়োজনের দুয়ার খুলবে আজ। ধানমন্ডি ২৭-এর মীনাবাজারের পাশের গলিতে লালমাটিয়ার দিকে ঢোকার মুখে পড়বে এটি। তিনতলা দুটি ভবনের মাঝে সংযোগ স্থাপন করে তৈরি করা হয়েছে বেঙ্গল বই।
গতানুগতিক বইয়ের দোকান নয় এটি। এর পেছনে আছে অন্য রকম এক ভাবনা। সেটাই বিস্তারিত জানালেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। বললেন, ‘শুধু ভালো একটা বইয়ের দোকান করাই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। সমাজের যে নানা অবক্ষয় নিয়ে আমরা চিন্তিত, সেটা নিয়ে একটা কাজ করতে চেয়েছিলাম। সবকিছুর সমাধান হয়তো বইয়ে নয়, কিন্তু মনন-রুচি তৈরির আবহ তৈরি করতে চেয়েছিলাম।’
বেঙ্গল বইয়ের প্রথম তলায় থাকছে তরুণদের জন্য আড্ডা দেওয়ার ব্যবস্থা। এখানে বসে পড়া যাবে পুরোনো বই। পছন্দ হলে কোনো বই নিয়েও যাওয়া যাবে, সেটি ফেরতও দিতে হবে না। তবে তার একটা বিনিময়মূল্য রয়েছে। সেটি হলো নিজের সংগ্রহ থেকে দুটি বই এখানে দিয়ে যেতে হবে। তরুণেরা যেন এই জায়গাটাকে নিজের জায়গা ভাবতে পারে, সে জন্যই এ ব্যবস্থা। একটা দেওয়া-নেওয়ার জায়গা তৈরি করা।
বই পড়া, আড্ডা দেওয়ার সময় এখানে মিলবে চা-শিঙাড়া। শুক্র-শনিবার ছুটির দিন সকালে করা যাবে সকালের নাশতাও। সঙ্গে আছে একটু খোলা জায়গা, যেখানে কখনো হবে নতুন বই প্রকাশনা অনুষ্ঠান, কখনো কবিতা পাঠের আসর, কখনো সংগীতায়োজন আবার কখনো সাহিত্যসভা।
দোতলা মূলত বই কেনার জায়গা। নানা ধরনের বই এখান থেকে সবাই কিনতে পারবেন। অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী কেউ লিফটে চড়ে দোতলায় এসে হুইলচেয়ারে পুরো জায়গা ঘুরে নিজের পছন্দমাফিক বই কিনতে পারবেন। এখানে আছে বারান্দায় বসে কফি খাওয়ার ব্যবস্থা।
তৃতীয় তলাটা বাচ্চাদের। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘আকাশকুসুম’। বাচ্চাদের বই পড়া, খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে এখানে। মিলবে পাঠ্যপুস্তকও। খাতা-কলম-পেনসিলও পাওয়া যাবে। মিলবে ছবি আঁকার কাগজ, তুলি, রং। মাঝে মাঝে বাচ্চাদের জন্য এখানে হবে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান। বাবা-মায়েদের জন্য আছে ম্যাগাজিন পড়ার ব্যবস্থা।
বাংলাদেশের ২৫টি ও ভারতে ১৫টি প্রকাশনার বই পাওয়া যাবে বেঙ্গল বইয়ে। থাকবে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, খাবারদাবার, শিল্পকলা, সাহিত্য, স্থাপত্যবিষয়ক বই। আছে শিল্পী ওয়াকিলুর রহমানের একটি ভাস্কর্য। এখানকার দেয়ালে মাঝে মাঝে হবে চিত্র প্রদর্শনী। খোলামেলা চারপাশে কয়েক টুকরো সবুজের দেখাও মিলবে।
ছবি : রবিউল কমল
Facebook Comments