কলকাতায় জুনিয়র ডাক্তারের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী চিকিৎসা সেবা দীর্ঘ সাত দিন ধরে অচল ছিল। এবার সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে চলেছে কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলোতে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর স্থানীয় সময় সোমবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ধর্মঘট তুলে নেয় জুনিয়র ডাক্তাররা।
আন্দোলনকারীদের ৩০ জনের প্রতিনিধির সামনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেয় যে, সবার আগে দেখা হবে হাসপাতালে যাতে আর একটাও হামলার ঘটনা না ঘটে। যদি ঘটে যায়, সে ক্ষেত্রেও দ্রুত এবং কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টায় নবান্নে বৈঠকের কথা থাকলেও, সকাল থেকে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মতো, টেলিভিশন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা বৈঠকের লাইভ টেলিকাস্ট করতে সম্মত হয় সরকার। এসব টানাপোড়েনের শেষে বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ শুরু হয় বৈঠক।
মমতার কাছে ১২ দফা লিখিত দাবি পেশ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রতিটি দাবিই আলাদা আলাদা করে তারা বিস্তারিত বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে। এগুলোর মধ্যে, হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় পুলিশের সংখ্যা এবং সক্রিয়তা বাড়ানোর দাবি যেমন ছিল, তেমনই ছিল রোগীদের অভাব অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য হাসপাতালের গ্রিভ্যান্স সেল বা অভিযোগগ্রহণ কেন্দ্রগুলোকে সামনে নিয়ে আসার দাবিও। একই সঙ্গে বিভিন্ন হাসপাতালে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘প্রভাব’ কমানোর জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়।
এনআরএসের ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থেকেও যে নিষ্ক্রিয় ছিল, তা মমতার সামনে তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের মমতা নির্দেশ দেন, এ নিয়ে যথাযথ তদন্ত করার। ভবিষ্যতে যাতে এমনটা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করা জন্যও পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
বেশ কয়েক দিনের বরফ গলে, এ দিন বৈঠকের শুরু থেকেই নমনীয় দেখা যায় দুপক্ষকে। মমতা এবং জুনিয়র ডাক্তাররা একে অপরের কথা শুনেছেন মন দিয়ে। বৈঠকে কিছু অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ উঠলেও, সুর কখনো চড়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের সব দাবি সঙ্গেই একমত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়র ডাক্তাররা আশা প্রকাশ করেছেন, বৈঠকের সব সিন্ধান্ত যথাযথ প্রয়োগ সরকারপক্ষ করবেন।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments