মেদিনীপুর জেলার খেজুরির কণ্ঠীবাড়িতে সরকারি অনুমতি ছাড়া সভা করতে যায় নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী ও প্রাক্তন আইপিএস কর্মকর্তা ভারতী ঘোষ। কণ্ঠীবাড়ি এলাকায় ঢুকতে গেলে পুলিশ তাকে বাধা দেয়, এবং উপস্থিত বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আর তাতেই বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের হাতে নির্যাতিত হন কাঁথি মহিলা থানার ওসি।
নির্যাতিত নারী পুলিশ কর্মকর্তা ওসি অনুষ্কা মাইতির অভিযোগ, তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়। ভারতীর প্ররোচনাতেই তার ওপরে আক্রমণ হয়েছে। রাতে হেঁড়িয়া থানায় ভারতীর বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন তিনি।
বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে কাঁথির এসডিপিও সৈয়দ মহম্মদ মামদোদুল হাসান, খেজুরি থানার ওসি গোপাল পাঠক, এক মহিলা পুলিশকর্মীসহ আট জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। এদিন গোলমালের মধ্যেই এক ফাঁকে পুলিশের বাধা এড়িয়ে ঘুরপথে খেজুরির কণ্ঠীবাড়িতে ঢোকেন ভারতী। সে জন্য পুলিশের তরফে একটি স্বতপ্রণোদিত ভাবে মামলাও করা হয়েছে।
কণ্ঠীবাড়ি যাওয়ার জন্য বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেঁড়িয়ায় পৌঁছান ভারতী ঘোষ। সভার অনুমোদন না থাকায় পুলিশ বাহিনী তাকে বাধা দেয়। কিছু দিন আগেই কণ্ঠীবাড়িতে বিজেপি এবং সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যাতে দু’পক্ষের কয়েকজন কর্মী জখম হয়, পার্টি অফিস ভাংচুর হয়। এমনকি পুলিশের গাড়ি নয়ানজুলিতে ফেলে দেয়ার ঘটনাও ঘটে।
ভারতী গেলে ফের এলাকা অশান্ত হতে পারে এই আশঙ্কায় তাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। ভারতী পাল্টা বলেন, ‘খেজুরিতে কি ১৪৪ ধারা জারি আছে? আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে আমি কি এক কাপ চা অথবা এক গ্লাস জল খেতে পারব না? পুলিশ শাসক দলের হয়ে দালালি করবে কেন?’
এর পরই তিনি গাড়ি থেকে নেমে হেঁড়িয়ায় রাস্তার পাশে বিদ্যুৎ দপ্তরের সামনে বসে পড়েন। তার সঙ্গে ছিলেন বিজেপির কাঁথি জেলা সভাপতি তপন মাইতি। তাদের ঘিরে থাকে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময় সেখানে টহল দিচ্ছিলেন কাঁথি মহিলা থানার ওসি অনুষ্কা মাইতি। তার অভিযোগ, ‘ভারতী ঘোষ আমাকে দেখেই বিজেপি কর্মীদের প্ররোচনা দেন। তার পরেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা তেড়ে আসে। আমাকে ঘিরে ধরে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। মারধর ও শ্লীলতাহানি করে।’
নিজে প্রাক্তন পুলিশ হয়েও কীভাবে তিনি এমন কাণ্ড করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ মহলে। জেলার পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘খেজুরির কণ্ঠীবাড়িতে সভার অনুমোদন দেয়া হয়নি। বিষয়টি লিখিতভাবে সভার উদ্যোক্তাদের খেজুরি থানার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। তবু যারা এদিন পুলিশকে বাধা দিল, হেনস্থা করল, মারধর করল, এমনকি মহিলা পুলিশের সঙ্গেও অশ্লীল আচরণ করল তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments