ব্যথাজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাঁর বাম হাতটা বাঁকা হয়ে গেছে। হাত ঝিমঝিম করে। বাম হাতটা ওপরে তুলতে পারেন না (চিকিৎসা পরিভাষায় ফ্রোজেন শোল্ডার)। তাঁর ঘাড়ে ও কোমরে ব্যথা। বাম ‘হিপ জয়েন্টে আর্থাইটিস ডেভলপ’ করেছে।
সোমবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে এক প্রেসবিফ্রিংয়ে এই তথ্য জানালেন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবদুল জলিল চৌধুরী।
আবদুল জলিল চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়ার সুষ্ঠু চিকিৎসায় যে উচ্চমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে তা করার আগে হার্ট, কিডনি, লাংসহ বেশকিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। বেগম জিয়ার উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে নেই বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কোনো ধরনের ইনফেকশন আছে কি-না তা জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
আবদুল জলিল চৌধুরী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাতজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এ সমস্যার জন্য ডাক্তার যেসব ওষুধ সেবন করতে বলেছিলেন সেগুলো কোনো কারণে সঠিকভাবে সেবন না করায় তার বাতজনিত সমস্যা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।
অধ্যাপক জলিল চৌধুরী বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সবাই একসাথে না দেখলেও কয়েকজন সদস্য বেগম খালেদা জিয়ার সাথে পৃথকভাবে দেখা করেন। গতকাল (রোববার) রাতে অধ্যাপক আতিকুল হক চৌধুরী তার সাথে দেখা করে কথা বলেন। এ সময় বেগম জিয়ার পছন্দের চিকিৎসক ডা. মামুন ছিলেন। বিএসএমএমইউয়ের দু’জন চিকিৎসক বেগম জিয়ার রোগের ইতিহাস ও চিকিৎসা পর্যালোচনা করছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার চিকিৎসা শুরু হবে। এ জন্য কতদিন লাগবে তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শনিবার বিকেলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খালেদা জিয়া অসুস্থ- বিএনপি নেতারা বহুদিন ধরেই এমন কথা বলে এলেও বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসা নিতে তারা শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছিল, কারাবিধি অনুযায়ী বিএসএমএমইউয়েই চিকিৎসা নিতে হবে খালেদা জিয়াকে।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। এরপর থেকে খালেদা জিয়া নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। এর আগে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়েছিল। সেই সময় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে ফের জেলখানায় পাঠানো হয়।
Facebook Comments