দিনদুপুরে পুলিশের সামনেই আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এক নারী বক্সারকে হেনস্তার অভিযোগ উঠল ভারতের কলকাতা শহরে। চোখের সামনে সব দেখেও হেনস্তাকারীকে ধরা তো দূরে থাক, ওই বক্সার সাহায্য চাইলে তাকে থানায় যাওয়ার ‘পরামর্শ’ দিয়ে দায় এড়িয়েছেন এক পুলিশ কর্মী! শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার মোমিনপুরে। সম্প্রতি, তাইওয়ানে পেশাদার বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে ভারতীয় বক্সার সুমন কুমারী। তার বাড়ি খিদিরপুর এলাকায়। অন্য দিনের মতো এ দিন সকাল ১২টা নাগাদ তিনি নিজের স্কুটিতে চেপে অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় মোমিনপুর মোড়ের কাছে এক যুবক তার সামনে এসে পড়েন।
সুমন বলেন, ‘ওই যুবক বাস ধরার চেষ্টা করছিলেন। আমার স্কুটির সামনে দিয়ে যেতে গিয়ে সামান্য আটকে যান। আর তাতেই তিনি মেজাজ হারিয়ে বাসে ওঠার সময় আমার উদ্দেশে গালিগালাজ শুরু করেন।’ সুমনের অভিযোগ, তিনি তখন প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেন, ততক্ষণে বাসটি ছেড়ে দেয়।
সুমন তখন বাসটির পিছন পিছন যান। পরের স্টপেজে বাস থামলে তিনি স্কুটি থামিয়ে ওই যুবককে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি গালিগালাজ করেছেন? সুমনের অভিযোগ, প্রতিবাদ করতেই ওই যুবক বাস থেকে নেমে এসে তাকে মারার চেষ্টা করেন। তার গলা চেপে ধরেন।
সুমনের অভিযোগ, ‘যখন ওই যুবক আমার গলা চেপে ধরেছেন, তখন কয়ের মিটার দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক পুলিশ কর্মী। আমি তার কাছে সাহায্য চেয়ে চিৎকার করি। কিন্তু তিনি কোনো সাহায্য না করে আমাকে বলেন থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে। তিনি কোনো সাহায্য করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।’
পুলিশের কাছ থেকে সাহায্য না পেয়ে সুমন নিজের মতো করে ওই যুবককে প্রতিরোধ করেন। ফলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় দুজনের মধ্যে। অভিযোগ, তখনও নিছক দর্শক ছিলেন ওই পুলিশ কর্মী। বরং এলাকার মানুষ ছুটে এসে দুজনকে ছাড়িয়ে দেন। এরপর নিজের কর্মস্থল কৃষি দপ্তরে পৌঁছে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেন।
কিছুদিন আগেই কলকাতার রাস্তায় হেনস্তার শিকার হন দেশটির মডেল এবং অভিনেত্রী ঊসষী সেনগুপ্ত। তিন তিনটি থানা তাকে ঘোরায়, গড়িমসি করে অভিযোগ নিতে। সেই ঘটনার পর আবারও এমন ঘটনা ঘটল। সুমন অবশ্য আস্থা রেখেছেন কলকাতা পুলিশের ওপর। তিনি আশাবাদী এই ঘটনার প্রতিকার হবে। ভারতের নারী নির্যাতন একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, সেখানে এখন সেলিব্রিটি থেকে দেশটির গর্বিত নারীরাও রেহাই পাচ্ছে না।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments