৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রবিবার সকালে নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি শুভেচ্ছাবার্তা পোস্ট করে কলকাতা পৌরনিগম মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ছবি এবং কলকাতা পৌরনিগমের লোগো সম্বলিত সেই শুভেচ্ছায় লেখা হয়, ‘এই প্রজাতন্ত্র দিবস, গাঢ় হোক একতার রঙ!’ কিন্তু, শুভেচ্ছা বার্তায় ভারতের যে মানচিত্রের ছবি দেওয়া হয়, সেটি বিকৃত। মানচিত্রে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং চিনের কব্জায় থাকা আকসাই চিনকে বাদ দেওয়া হয়েছে ভারত থেকে।
এই বিষয়টি নজরে আসতেই তুমুল হইচই শুরু হয় নানা মহলে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক।কী ভাবে ঘটল এই ঘটনা? কে তৈরি করলেন এই শুভেচ্ছাবার্তা? মেয়র ফিরহাদ হাকিম বা পৌরনিগমের অন্য কোনও কর্তার চোখে কি ধরাই পড়ল না বিষয়টা? এমন নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে পৌরনিগমের ফেসবুক পোস্টটিকে ঘিরে। কিন্তু ভারত কখনও ওই দুই অঞ্চলের উপরে নিজেদের দাবি ছাড়েনি। পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং আকসাই চিন ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে ভারত সরকার বরাবর দাবি করে এসেছে। ভারতের মানচিত্র থেকে যেন ওই দুই অঞ্চলকে বাদ দিয়ে দেখানো না হয়— এ বার্তা গুগ্লকেও দিয়ে রেখেছে নয়াদিল্লি। এত কিছুর পরেও কলকাতা পুরসভার শুভেচ্ছাবার্তায় দেখানো মানচিত্রে ওই দুই অঞ্চল বাদ পড়ায় বড়সড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে ডেপুটি মেয়র বলেছেন— যদি এমনটা হয়ে থাকে, তা হলে ভুল হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় আসরে নেমেছে বিরোধীরা।
ফিরহাদ হাকিমকে আক্রমণ করেছে বামেরাও। বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ”ফিরহাদ হাকিম একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি কলকাতার মেয়র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখুন, ভারতের মানচিত্র নিয়ে কী হচ্ছে! তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্রুত এই ভুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আমরা তা দেখতে চাই।” রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু তীব্র আক্রমণ করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। তিনি বলেন, ‘মিনি পাকিস্তানের প্রবক্তা তো এই ফিরহাদ হাকিমই। তাই তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের নির্দেশে মানচিত্রটা বিকৃত করেছেন, কাশ্মীরকে ভারতের মানচিত্র থেকে বাদ দিয়ে দেখিয়েছেন।’ এতেই থামেননি সায়ন্তন। তাঁর কথায়, ‘আমরা বার বারই বলছি, পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা চলছে। এটাও সেই চেষ্টারই অঙ্গ। মমতা ব্যানার্জি তাঁর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্দেশে এ সব করাচ্ছেন।’
Facebook Comments