কলকাতার পড়ন্ত শীত ও বইমেলা এক অবিচ্ছেদ্য প্রেমকাহিনী এবং দেখতে দেখতে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা পদার্পণ করল ৪২ তম বছরে। ময়দান, মিলনমেলা প্রাঙ্গন ঘুরে এই বছর বইমেলার আয়োজন হয়েছে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। ৩০শে জানুয়ারি থেকে ১১ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা অবধি খোলা থাকবে বইমেলা। এবারের থিম দেশ হল “ফ্রান্স”। বিগত সব বইমেলার থেকে এবছরের থিম দেশের স্টল সবথেকে বড় হয়েছে এবং অতীব নজরকাড়া। বর্তমান সরকারের কর্মকান্ডে কলকাতা শহরকে যে ভাবে সুন্দর ও সংগঠিত করে তোলার এক মরিয়া প্রচেষ্টা আছে তাই ধরা পড়ল বইমেলা সাজানোর ধরনের মধ্যে। হয়ত এক বিতর্কের সৃষ্টি হবে, তবুও বলতে বাধ্য হচ্ছি বিগত সব বছরের সব ইতিহাস ভেঙে দিয়েছে এইবারের বইমেলা সংগঠন, পরিচ্ছন্নতা, পুলিশি ব্যবস্থা এবং পরিবহন এইসব দিক থেকে। পরিকল্পনা বড় হলে যে কোনো সমস্যা আর সমস্যা থাকেনা। ফ্রান্স ছাড়াও বড় স্টল প্রতিবারের মত এবারো বাংলাদেশ, আমেরিকা। উদ্বোধনের দুইদিন পরেও কিছু স্টলের কাজ এখনো বাকি, এটিই শুধু দুঃখের।
তৃণমূলের “জাগো বাংলা” স্টলের বাইরে কন্যাশ্রী ও সাইকেল প্রদান প্রকল্পের সফলতার প্রতিরূপের সাথে সেলফি তোলার হিড়িক দেখার মত ছিল। পাওয়া গেলো বঙ্গ রাজনীতি থেকে ক্রমে ইতিহাসে বিলীন হতে চলা “রাহুল সিনহা” কে হালকা মেজাজে সেলফি তোলার আবদার মেটাচ্ছেন। কলকাতার বড় বড় প্রকাশকরা এবারে একটু ছোটো স্টল পেয়েছেন এবং ভিড় মনে হল একটু কম। বহু প্রচারের পর পাটের ব্যাগ ব্যবহার এবারে চোখে পড়ার মত এবং দশটি জায়গায় ব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে। যথাক্রমে লিটিল ম্যাগাজিন গুলির স্টলে উৎসুকি চোখের অভাব নেই।
ঘুরতে ঘুরতে বিকাল হয়ে এলে পড়ন্ত বিকালের রোদ গায়ে মেখে বসুন পার্কের লেকের ধারে, যেখানে পরিযায়ী পাখিদের কলতান ও ডুবন্ত সূর্য আপনার ক্লান্তিকে নিমেষে শুষে নেবে। বিকালের চা টি শেষ করে তাহলে আবার উঠুন আর বেরিয়ে পড়ুন নতুন বইএর সন্ধানে।
Photographer – Rainak Dutta
Facebook Comments