মেট্রোয় যাতায়াতের সময় প্রকৃতি ডাক এলে ঘাম ছোটানো ছাড়া এতদিন উপায় ছিল না। কাঁচুমাচু মুখ করে অগত্যা নেমে পড়তে হত পাতাল রেল থেকে। তারপর উুঁচু খাড়াই সিঁড়ি বেয়ে পাতাল থেকে বেড়িয়ে খুঁজতে হত শৌচাগার। তবে বর্তমানে এই সমস্যা কিছুটা হলেও সমাধান করলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যেমন আমরা আগে জানিয়েছিলাম, পাতাল রেল স্টেশনে পাবলিক টয়লেট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা মেট্রো।
এ প্রসঙ্গে কয়েকদিন আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে মেট্রো রেলের এক আধিকারিক বলেছিলেন, “কোথায় কোথায় বসানো সম্ভব তা দেখা হচ্ছে।” গত শনিবার কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে ঘোষণা করেছে, প্রথমে শহীদ ক্ষুদিরাম এবং নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশনে শৌচালয় খোলা হবে।
মহিলা এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই তৈরি করা হয়েছে শৌচাগার। “দুটি পৃথক কর্মসূচিতে উদ্বোধন করা হয়েছে সিনিয়র যাত্রীদের পাবলিক টয়লেট। একটি মহিলাদের এবং অন্যটি পুরুষদের…” মেট্রো রেলওয়ে কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
মেট্রো রেলওয়ের সিপিআরও ইন্দ্রানী ব্যানার্জী বলেন, দুর্গা পূজার সময় আরও দুটি স্টেশনে শৌচালয়ের সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। বেলগাছিয়া এবং শোভাবাজার-সুতানুটিতে নির্মাণকার্য প্রায় শেষের পথে এবং খুব শীঘ্রই যাত্রীদের জন্য সেগুলি খুলে দেওয়া হবে। বিশেষত বয়স্কদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে কলকাতা পাতাল রেলের শৌচাগারে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) ২০১৬ সালে যাত্রীদের জন্য টয়লেট নির্মাণের জন্য রেলওয়ের বোর্ডকে অনুরোধ জানান, তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে শৌচালয় নির্মাণকার্য শুরু হয়। ২০১৬ সালে শহরের এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু আশ্বাস দিয়েছিলেন, মেট্রোয় শৌচাগার তৈরি করা নিয়ে তারা বিবেচনা করবেন। এতদিন মেট্রোয় পাবলিক টয়লেটের অভাবের কারণে অনেক সময় যাত্রীদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
১৭ বছরের এক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী অনিন্দিতা দাস বলেন, “নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত যেতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা… আমার মনে হয়, যদি সব স্টেশনেই এই শৌচাগারের সুবিধা থাকে তাহলে যাত্রীদের জন্য ভালো হবে।”
মেট্রো স্টেশনে শৌচাগার হলে বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের খুব উপকার হবে বলে মনে করেন ফ্যাশন ডিজাইনার সন্দীপ দাস। তিনি বলেন, “শৌচাগার থাকলে তো খুবই ভাল। অনেকেরই সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের খুব সমস্যা হয় শৌচাগার না থাকায়।”
Facebook Comments