লোকসভা নির্বাচনের ভোট যত শেষের দিকে এগোচ্ছে, বেড়েই চলেছে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি। আলোয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মায়াবতীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার জবাবে আগেও রাজনৈতিকভাবে মোদীকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন মায়াবতী। কিন্তু, সোমবার (১৩ মে) ফের সেই ইস্যুতেই মোদীকে নজিরবিহীনভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসলেন মায়াবতী। তিনি এদিন বলেন, ‘বিজেপি নেত্রীরা তাদের স্বামীকে মোদীর আশেপাশে দেখলেই আতঙ্কে ওঠেন। তারা ভয় পান এই বুঝি মোদী নিজের মতো তাদেরও বিবাহবিচ্ছেদ করে দেবেন।’
মায়াবতীর আক্রমণের জবাবে বিজেপির বক্তব্য, ব্যক্তিগত পরিবার নয়, দেশকেই নিজের পরিবার বানিয়েছেন মোদী। গত ২৬ এপ্রিল অলওয়ারে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পেছনে বসিয়ে নিয়ে বাইকে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় দুটি বাইকে চারজন তাদের পথ আটকায়। রাস্তার পাশে জমিতে নিয়ে গিয়ে মহিলাকে গণধর্ষণ করে। একজন ঘটনার ভিডিও তুলে রাখে মোবাইলে। মোবাইল ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে পরে মোটা টাকাও দাবি করে ধর্ষকরা।
কয়েক মাস আগেই রাজস্থানে ক্ষমতা গ্রহণ করে কংগ্রেস। কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি। সেই সূত্রেই মোদী মায়াবতীকে লক্ষ্য করে বলেন, অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মায়াবতী সত্যিই উদ্বিগ্ন হলে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিতেন।
তার জবাবে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মায়বতী পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘আলোয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মোদী নীরব ছিলেন। এখন সেটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছেন, যাতে তার দল বিজেপি ভোটে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারে। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। যিনি নিজেই রাজনৈতিক ফায়দার জন্য নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করেছেন, তিনি কীভাবে অন্য কারও মা-বোনকে সম্মান করতে পারবেন।’ একই সঙ্গে এ দিন দলিত ইস্যুতেও মোদীকে বিঁধিয়েছেন বিএসপি সুপ্রিমো।
মায়াবতীর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন ওড়িশার পুরীর বিজেপি প্রার্থী সম্বিত পাত্র। মায়াবতীর মন্তব্যের পাল্টা টুইটারে তার বক্তব্য, ‘মায়াবতীজি যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্য বেদনাদায়ক। এটা কী ধরনের মানসিকতা? মোদীজির প্রতি এত ঘৃণা? কেন? কারণ উনি প্রকৃত পরিবার ছেড়ে দেশকেই নিজের পরিবার করে তুলেছেন। মায়াবতীজি, আপনার জন্য আপনার ভাই বড় হতে পারে, কিন্তু মোদীর কাছে দেশ সবার আগে।’
পশ্চিমবঙ্গেও রাজনৈতিক জনসভায় প্রায় প্রতিদিনই মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক সভায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলেছেন। যিনি নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছেন এবং খোঁজ খবরই রাখেন না, তিনি দেশ চালাবেন কীভাবে, এই প্রশ্ন তুলেছেন।
পাল্টা জবাবে মোদী-অমিত শাহরাও স্পিডব্রেকার দিদি, তৃণমূলের তোলাবাজির অভিযোগ করে তা নিয়ে সরব হয়েছেন। খোঁচা দিয়ে চলেছেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জুড়ে। কিন্তু সোমবার মায়াবতী ব্যক্তিগত আক্রমণে সে সবই ছাপিয়ে গেলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
ছবি সংগৃহীত
Facebook Comments