বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে বিশ্বাসঘাতক বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। তাকে ‘মীরজাফর’ বলে মন্তব্য করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘তিনি দল ছাড়লে ভালোই হবে।’ দল বিরোধী মন্তব্য করায় রবিবারই সব্যসাচী দত্তের ডানা ছাঁটা হয়, তার জায়গায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয় ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব্যসাচী দত্ত একজন বিশ্বাসঘাতক। তিনি মীরজাফর। তিনি দল ছাড়লে ভালোই হব। তিনি যেখানে ইচ্ছে, যেতে পারেন, আমরা এ নিয়ে চিন্তিত নই। তবে দলে আমরা বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করব না।’
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজ উদ-দৌল্লা, তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন মীরজাফর। পরবর্তীকালে তাকেই সিংহাসনে বসিয়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ইতিহাসের সেই কাহিনি থেকেই মীরজাফর নাম বা শব্দটি বিশ্বাসঘাতকতা বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
দলবিরোধী মন্তব্য করা থেকে শুরু করে, বিজেপির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতায় বিরক্ত তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারা। শুক্রবার সল্টলেকে শ্রমিক সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। সেখানেই, বেতনবৃদ্ধির মতো শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি না মেটানোর অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা জানান, বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সব্যসাচী দত্তকে ইস্তফা দিতে বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল, তবে তাকে করা কোনো ফোনকল বা মেসেজের কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘তিনি যদি নিজে ইস্তফা না দেন, তাহলে তাকে পদচ্যূত করতে অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন কাউন্সিলাররা।’
কাউন্সিলারদের এক জরুরি বৈঠকে বিধানগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের ডানা ছাঁটার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দলে সব্যসাচী দত্তের ভবিষ্যৎ কী, বা তাকে নিয়ে দলের কী অবস্থান তা স্পষ্ট করার জন্য দলনেত্রীকে আবেদন করেন কাউন্সিলাররা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাক হাকিমও। বৈঠকে হাজির হওয়া এক কাউন্সিলার বলেন, ‘মেয়র পদে সব্যসাচী দত্ত থেকে গেলে, অনেক কাউন্সিলারই পদত্যাগের হুমকি দিচ্ছেন। যাইহোক, এটাই ঠিক হয়েছে, যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments