বঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুমৃত্যু। রাজ্যজুড়ে এমন হাহাকারের মধ্যে কলকাতার বি সি রায় হাসপাতালে প্রাণ গেলো আরও চার শিশুর। এ নিয়ে গত দু’মাসে পশ্চিমবঙ্গে জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে অন্তত ৪৬ শিশুর মৃত্যু হলো। তবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে শিশুমৃত্যুর তথ্য নিয়ে রাজ্য সরকার সঠিক তথ্য দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) নবান্নে সংবাদ সম্মেলন করে অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক না ছড়াতে অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। গত কয়েকদিনে রাজ্যে যত শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র দুজনের শরীরে অ্যাডিনোভাইরাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ১২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র দু’জনের শরীরে অ্যাডিনোভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বাকি ১০ শিশুর কো-মর্বিডিটি ছিল। এর জন্যেই মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ দেখা যাচ্ছে কম ওজন বা অপরিণত শিশুর জন্ম। তাছাড়া শীত গিয়ে গরম পড়েছে। এই আবহাওয়া বদলের মৌসুমে প্রতি বছরই শিশুদের শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট হয়। এতে ঘাবড়ে না গিয়ে বাড়ির লোকজনকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
এদিন জনগণকে আশ্বস্ত করে মমতা ব্যানার্জী বলেন, আমি বারবার বলি, ভয় পাবেন না। পাঁচ হাজার বেড, ৬০০ চিকিৎসক প্রস্তুত রয়েছেন। করোনা যেহেতু প্যানিক হয়ে গেছে, তাই এখন যেকোনো একটা ভাইরাস এলেই সেটি নিয়ে রাজনীতি করে বিরোধীরা।
তিনি বলেন, বাড়ির লোকজনকে যত্ন নিতে হবে। বাচ্চারা মাস্ক পরতে পারে না। ওদের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। ওদের ঘরে রাখাটাই ভালো। জেলার হাসপাতালগুলোকেও আরেকটু দায়িত্ববান হতে হবে। একটা প্রিম্যাচিউর বেবি যদি মালদা বা মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় আসে, তাহলে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা আসতে সময় লাগে। বাচ্চা তো ওখানেই মারা যাচ্ছে। এটুকু যত্ন তো লোকাল হাসপাতালেই নিতে পারে। এর জন্য টেলিমেডিসিনের ব্যবস্থা রয়েছে।
Facebook Comments