গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে শ্রদ্ধার সাথে পালিত হলো শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবস। মূল অনুষ্ঠানটি হলো ক্ষুদিরামের জন্মস্থান কেশপুরের মোহবনী গ্রামে। শহীদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থান কেশপুরের মোহবনীতে গ্রামে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর ১১১তম আত্মবলিদান দিবস।সকালে সমিতির সভাপতি চিত্তরঞ্জন গরাই ও সম্পাদক রামচন্দ্র সানির নেতৃত্বে সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সদস্য-সদস্যা ও গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে একটি বর্ণাঢ্য প্রভাতফেরী এলাকা পরিক্রমা করে। প্রভাত ফেরী শেষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সমিতির সম্পাদক রামচন্দ্র সানি। এরপর সমিতির সভাপতি চিত্তরঞ্জন গরাইয়ের সভাপতিত্বে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ক্ষুদিরাম বসুর মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী, পুলিশ সুপার আলোক রাজোরিয়া, মেদিনীপুর সদরের মহকুমা শাসক দীননারায়ণ ঘোষ, কেশপুরের বিডিও সৌরভ মজুমদার, বিধায়িকা শিউলি সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্ত, সমাজসেবী সঞ্জয় পান সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা। স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি অজিত মাইতি, জেলা পরিষদ সদস্য রমাপ্রসাদ গিরি, অধ্যাপক জাহির চৌধুরী, প্রধান শিক্ষক নারায়ণ প্রসাদ চৌধুরী প্রমুখ। দেশাত্ববোধক আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য ও আলোচনার মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে বাচিক শিল্পী অর্ণব বেরা ও সঙ্গীত শিল্পী উদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
উদ্যোক্তাদের পক্ষে সমিতির সদস্য সঞ্জয় সামন্ত, শিক্ষক চন্দন চক্রবর্তী, অর্ণব দাসসহ অন্যান্যরা জানান, ‘আগামীদিনে কেশপুরের প্রতিটি গ্রামে ও গঞ্জ এলাকায় শিশু, কিশোর, ছাত্রছাত্রী ও যুবদের মধ্যে ক্ষুদিরামের আত্মবলিদানে কাহিনী তুলে ধরতে নানা রকম সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে”। এদিনের অনুষ্ঠানে জেলা শাসক পি মোহন গান্ধী তাঁর বক্তব্যে মোহবনীতে শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর ব্যবহৃত সামগ্রী ও তাঁকে নিয়ে গবেষণামূলক নানা তথ্য সহযোগে একটি ক্ষুদিরাম বিষয়ক সংগ্রহশালা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। জেলার পুলিশ সুপার আলোক রাজোরিয়া মোহবনীতে “অনুশীলন”নামে একটি ব্যায়ামাগার গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের ঘোষণাকে প্রবল হর্ষধ্বনি ও বিপুল করতালিতে স্বাগত জানায় উপস্থিত জনতা। গোটা দিনের এই বর্ণময় অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন শিক্ষক স্নেহাশীষ চৌধুরী। বিকেলে গ্রামবাসীসহ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সভাপতি চিত্তরঞ্জন গরাই। সমিতির সম্পাদক রামচন্দ্র সানি জানান, তাঁরা চান সবার সহযোগিতায় মোহবনীর আমূল সংস্কার হোক এবং গোটা দেশের সামনে মোহবনীকে একটি শহীদ পীঠস্থান হিসেবে গড়ে তোলা হোক।
ছবি – শহীদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতি রক্ষা কমিটির সৌজন্যে
Facebook Comments