পোশাকি নাম চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর। অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কে উন্নতির উদ্দেশ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘চাঞ্চল্যকর’এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে চীন। দেশটির এই ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পের আড়ালেই লুকিয়ে রয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা।
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর ফাঁস করে মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও উন্নতির লক্ষ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ প্রকল্প শুরু করে চীন। কিন্তু এর আড়ালেই লুকিয়ে রয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা।
এতে বলা হয়, পাকিস্তানে যুদ্ধবিমান তৈরির ঘাঁটি বানাতেই চীনের এই কৌশল, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে সহজে বিমান বিক্রির ঠিকাদারি পাওয়া যায়।
ভারতের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের কাজ শুরু করে দিয়েছে বেইজিং ও ইসলামাবাদ। এ রাস্তা ও রেলপথের একটি অংশ যাচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ভেতর দিয়ে। ভারতের আপত্তি ছিল সেই কারণেই।
বুধবার নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকাশ্যে বাণিজ্যিক বোঝাপড়ার কথা বলা হলেও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের পেছনে লুকিয়ে আছে যুদ্ধবিমান বানানোর গোপন বোঝাপড়া, যার অংশীদার চীন এবং পাকিস্তান যৌথভাবে।
যে কারণে এ প্রকল্পে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করছে চীন, যার পরিমাণ এই মুহূর্তে প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।
শুধু যুদ্ধবিমানই নয়, বানানো হবে আরও অনেক অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্র এবং যন্ত্রাংশ, দাবি নিউইয়র্ক টাইমসের।
এই মুহূর্তে অত্যাধুনিক জে-২০ এবং জে-৩১ যুদ্ধবিমান বানাতে গবেষণা চালাচ্ছে চীন, যা অত্যাধুনিক মার্কিন বা রুশ যুদ্ধবিমানের সমকক্ষ। এর আগে জে এফ-১৭ নামের একটি অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের যুদ্ধবিমান বানাতে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে চীন।
পাকিস্তান পাঞ্জাবে আছে এই যুদ্ধবিমানের কারখানা। এখনও পর্যন্ত চীন বা পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে এই বিমান দেখা না গেলেও, দ্য উইক পত্রিকার দাবি, মিয়ানমারে চীনা সামরিক মহড়ায় উড়তে দেখা গিয়েছে জেএফ-১৭।
সামরিক যন্ত্রাংশ বানাতে এই বছরের শুরুতেই পাক বিমান বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন চীনা প্রতিনিধিরা। সেই বৈঠকে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের মধ্যেই একটি বিশেষ অর্থনেতিক অঞ্চল গড়ে তোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
Facebook Comments