একটি নির্দিষ্ট বয়স পেরোলেই তরুণ-তরুণীদের দিকে ছুটে যায় এমন ইঙ্গিতপূর্ণ জিজ্ঞাসা। অতটা ভণিতা না করে কেউ সরাসরিই জিজ্ঞেস করেন, ‘বিয়ে করছ কবে?’ এমন সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব কঠিন কাজ। ‘একটু গুছিয়ে নিই’, ‘আরে বয়স তো এখনো আছে’ বলে পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলে। কিন্তু আসলেই কোন বয়সে বিয়ে করা উচিত?
বিয়ের আদর্শ বয়স কত? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই রয়েছে। কেউ ২০ বছরে বিয়ে করেন তো কারও পার হয়ে যায় ৩০। আবার কেউ চল্লিশের কোঠায় গিয়েও দ্বিধায় ভোগেন। এর ফলে পরবর্তী দাম্পত্য জীবনে দেখা দেয় নানা সংকট। কিন্তু বিয়ে করার আদর্শ বয়স কতো বা বিজ্ঞানই বা এ বিষয়ে কী বলে?
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উচাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস এইচ উলফিঙ্গার এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, বিয়ে করার আদর্শ বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, এ সময়ের মধ্যে যারা বিয়ে করেন, দাম্পত্য জীবনে তাদের বিচ্ছেদের ঝুঁকি অনেক কম।
গবেষণাটি প্রকাশ করেছে ইন্সটিটিউট অব ফ্যামিলি স্টাডিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান, যারা যুগলদের ৩০ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করার পরামর্শ দেয়।
গবেষণায় উঠে এসেছে, যারা ২৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের মধ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা প্রবল থাকে। কিশোর বয়স পার করে ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বিয়ে করলে তালাকের আশংকা অনেক কম। আবার ৩০ বছরের পর থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করলে এই আশংকা অনেক বেড়ে যায়।
উলফিঙ্গারের মতে, যারা ৩২ বছরের পর বা তার থেকে বেশি বয়সে বিয়ে করেছেন, তাদের মধ্যে তালাকের আশংকা প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। অথচ যারা বিয়ে করতে ৩০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন, তাদের অনেকেই মনে করেন, তারা অন্যদের তুলনায় ভাল করছেন।
তিনি বলেন, যারা দেরিতে বিয়ে করেন, তাদের জীবনে সাফল্যও দেরিতে আসে। এমনকি সন্তানাদি নেয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়।
শুধু বয়স নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আরও কিছু ব্যাপার। যিনি বিয়ে করছেন, সেই ছেলে বা মেয়েটি শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত কি না, জীবনের এত বড় দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে উপযুক্ত ভাবছেন কি না, ক্যারিয়ারের কোন পর্যায়ে আছেন…এমন অনেক বিষয় কাজ করে। আবার এও ঠিক, এসব নিয়ে বেশি বেশি ভাবতে গিয়ে বা দুশ্চিন্তা করতে গিয়ে অনেকে সঠিক সময়ে বিয়েটাই করে উঠতে পারেন না।
কোন দেশে বিয়ের বয়স কেমন?
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছরকেই ধরা হয়। তবে দেশ ভেদে এই বয়স কমবেশিও হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইনের বরাত দিয়ে মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া জানিয়েছে এ বিষয়ে কিছু তথ্য। সে জায়গা থেকে বাছাই করা দেশের বিয়ের বয়স সংক্রান্ত একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
বিয়ে কোনো ছেলে খেলা নয়। অনেক বড় একটি দায়িত্ব জড়িয়ে আছে এতে। বাপের বাড়ি, শ্বশুর বাড়ি এবং নিজের সংসার স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই ৩ টি সংসার সামাল দিতে হবে। তাই প্রথমে নিজেকে একটু গুছিয়ে নিতে শেখা উচিত। আর এই গুছানো ২৫ বছরের পরেই দেখা যায় সকলের মধ্যে।
Facebook Comments