ওয়াহিদ ম্যানশনে কেমিক্যাল ছিল বলে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে.কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান বলেছেন, ‘ভবনের ভেতরে গ্যাস লাইটার রিফিলের পদার্থ ছিলো। এটা নিজেই একটা দাহ্য পদার্থ। এছাড়া আরও অন্যান্য কেমিক্যাল ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছে। পারফিউমের বোতলে রিফিল করা হতো এখানে। সেই বোতলগুলো ব্লাস্ট হয়ে বোমের মতো কাজ করেছে। এগুলো আগুনকে টিগার করেছে। যার কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। কেমিক্যালের কারণ এভাবে ছড়িয়েছে। না হলে কখনোই আগুনে এভাবে ছড়ায় না।’ শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ চিহ্নিতকরণ বিষয়ক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটির সদস্য তিনি।
এ সময় শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে জুলফিকার রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি এখানে যে জিনিসগুলো আছে সেগুলো অবশ্যই কেমিক্যাল। ওয়াহিদ ম্যানশনে কেমক্যাল ছিল না-শিল্পমন্ত্রী কথাটা কোন আঙ্গিকে বলেছেন এটা আমার জানা নেই।’
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে কমিটির আরেক সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুর কৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ভবন পরিদর্শনকালে দেখেছি ৫টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওয়াহিদ ম্যানশনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার কলাম এবং বিনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ভবনটা ব্যবহার করা যাবে কিনা তা আগামী সাত দিনের মধ্যে বিস্তারিত বলা যাবে। এছাড়া অন্যান্য ভবনগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে শক্তি দরকার তা আছে বলে আমরা মনে করি।
বুয়েটের এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘আমরা ঘুরে দেখলাম ওয়াহিদ ম্যানশন একটি অনেক বড় বিল্ডিং এটি কমপক্ষে ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত। এ ধরনের ভবনের মধ্যে মাত্র একটি সিঁড়ি, যা পর্যাপ্ত না। ভবনের দ্বিতীয় তলাটা পুরোটাই গুদাম ছিল। ওই ভবনে আগুন নির্বাপণের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না।’
ভবনটি রাজউক অনুমোদনের বিষয়ে এ সময় রাজউকের অথরাইজড অফিসার নুরুজ্জামান জাহিদ বলেন, ‘এই ভবনটি রাজউক অনুমোদিত কিনা আমরা ওভাবে এখনও তথ্য নিতে পারি নাই। ওদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাবে আসলে তারা অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ করেছেন কিনা।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সংবাদ সম্মেলনে ডিএসসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও সিটি করপোরেশনের মেয়র এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেছেন তারা যাতে এই কমিটিগুলো সরিয়ে নেন। এখানে কিন্তু কোনও কেমিক্যালের লাইসেন্স দেওয়া হয়নি এবং কোনও লাইসেন্স রিনিউ করা হয়নি। এগুলোর জন্য আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন আগুন লেগেছে এবং কারা কারা এই ঘটনার জন্য দায়ী কমিটি সে বিষয়ে তদন্ত করবেন।’
Facebook Comments