ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সেনা বহরে করা জঙ্গি হামলার পর ইতোমধ্যে বদলা নিতে শুরু করেছে ভারত সরকার। মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর রাতে দুদেশের নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে অধিকৃত কাশ্মিরের জঙ্গি ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালিয়েছে ভারতের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর চালানো হামলায় অন্তত দুই থেকে তিন শতাধিক সন্ত্রাসী প্রাণ হারিয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের বরাতে করা প্রতিবেদনে এই বিমান হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়া টুডে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন ভোর সাড়ে ৩টা নাগাদ ভারতীয় যুদ্ধবিমান মাইরেজ ২০০০-এর সাহায্যে সেই হামলাগুলো পরিচালনা করা হয়। মুজফফরাবাদ সেক্টরের সবকয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ইতোমধ্যে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতের বিমান বাহিনী। এবারের অপারেশনে বাহিনীর অন্তত ১২টি শক্তিশালী যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছিল। এতে প্রায় মোট এক হাজার কেজি বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীদের সবকয়টি ক্যাম্পকে পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ভারতীয় বিমান বাহিনী আকাশ সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে এক টুইট বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর।
পাক-সেনাবাহিনীর এ মুখপাত্র তার টুইট বার্তায় গফুর বলেছেন, ‘মুজাফফরাবাদ সেক্টর থেকে পাকিস্তানে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমান। তখন বিমান থেকে বালাকোট সেক্টরে বেশ কয়েকটি বোমা ফেলা হয়। যদিও পাক অধিকৃত কাশ্মিরে ভারতের করা এ হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
অপরদিকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর দাবি, পাক অধিকৃত অঞ্চল কাশ্মিরে ভারতের করা হামলাটি প্রায় ২১ মিনিট ধরে চলমান ছিল। এতে সন্ত্রাসীদের আস্তানা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এ সময় মুজাফফরাবাদ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী বালাকোট সেক্টরেও হামলা চালানো হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সীমান্ত অতিক্রম করে আরও একটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। তখনকার সেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর এবার নতুন করে পাক অধিকৃত কাশ্মিরে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মিরে এক আধাসামরিক বাহিনীর গাড়ি বহরে পাকিস্তান পন্থী জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদের করা হামলায় অন্তত ৪৪ সেনা নিহত হন। হামলার সময় গাড়িটিতে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) কমপক্ষে ৫৪ জন সদস্য ছিলেন।
Facebook Comments