পার্লামেন্টে নরেন্দ্র মোদি টিম-২-এর বাজেট অধিবেশন আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে। সপ্তদশ লোকসভার অধিবেশন শেষ হবে ২৬ জুলাই।
তার আগে রোববার সকালে সর্বদলীয় বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বিল পাস করাতে বিরোধী দলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এবারের অধিবেশনে গঠনমূলক বিতর্ক এবং আলোচনাই সরকারের কর্মসূচির মূল বিষয় হতে চলেছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
আগামী ৫ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকারের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। অধিবেশন শুরুর প্রথম দু’দিন নতুন এমপিরা শপথ নেবেন।
সপ্তদশ লোকসভার স্পিকার নির্বাচন হবে ১৯ জুন। বাজেট ঘোষণার আগে শুক্রবার শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন সীতারমন। এটা ছিল তার বাজেট ঘোষণা-পূর্ববর্তী ষষ্ঠ পরামর্শ বৈঠক।
এবারের অধিবেশনে তিন তালাক বিল পাস করানোর জোর চেষ্টা চালাতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। গত লোকসভায় রাজ্যসভায় আটকে গিয়েছিল তিন তালাক বিল।
শুধু বিরোধীরা নয়, এনডিএ শরিক নীতিশ কুমারও এ বিলের প্রতিবাদ করেন। রাজ্যসভার ২৪৫টি আসনের মধ্যে ১০২ জন সাংসদ নিয়ে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে দুর্বল থাকায় বহু বিল রাজ্যসভায় আটকে গেছে। তিন তালাক বিল এবারের বাজেট অধিবেশনে পাস করাতে বিজেপি বদ্ধপরিকর বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
বাজেট অধিবেশনের আগে বিরোধী সব দলের সহযোগিতা কামনায় রোববার বৈঠক করেন মোদি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, সংসদীয় মন্ত্রী প্রাহ্লাদ জোশী, রাজ্যসভার বিজেপি নেতা থাওয়ার চন্দ্র গেহলটসহ অন্য নেতারা। বিরোধী দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের গুলাম নবী আজাদ, আনন্দ শর্মা, আধির রঞ্জন চৌধুরী, তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়েন, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লাহ এবং ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির সুপ্রিয়া সুলে।
সংসদ অধিবেশেনে বেকারত্ব, খরা বা নারী সংরক্ষণ বিলের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন নেতারা। তৃণমূলের তরফে ব্যালটে ভোটদানের দাবি উঠেছে। নারী সংরক্ষণ বিল পাসের দাবিও তোলে দলটি। কৃষক সমস্যা থেকে শুরু করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনের দাবি করেছে কংগ্রেস। বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ জানান, জনস্বার্থে যে সব বিল সংসদে পেশ করা হবে, তার বিরোধিতা করবেন না তারা।
এ বৈঠক থেকেই ১৯ জুন ‘এক জাতি, এক নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন মোদি। এ বিষয়ে সংসদীয় মন্ত্রী প্রাহ্লাদ জোশী বলেন, এখানে ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের ৭৫ বছর এবং চলতি বছরে মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের বিষয়েও আলোচনা হবে।’ তিনি আরও বলেন, এর পরের দিন (২০ জুন) রাজ্যসভা ও লোকসভার সব এমপির উপস্থিতিতে নৈশভোজ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার বৈঠকের পর মোদি টুইটারে লেখেন, ‘নির্বাচনের ফলাফলের পর এবং বাজেট অধিবেশনের আগে সর্বদলের অংশগ্রহণে আমরা একটি অর্থবহ বৈঠক করতে পেরেছি। নেতাদের মূল্যবান পরামর্শের জন্য তাদের ধন্যবাদ। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে পার্লামেন্ট যাতে নির্বিঘ্ন গতিতে চলতে পারে সেজন্য আমরা সবাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
পাঁচ বছরে ৫ লাখ কোটির রফতানি লক্ষ্যমাত্রা মোদির : ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতকে পাঁচ লাখ কোটি রুপির অর্থনীতিতে পরিণত করা কঠিন হলেও তা সম্ভব বলে জানিয়েছেন মোদি।
রাষ্ট্রপতি ভবনে শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। এজন্য রাজ্য সরকারগুলোকে রফতানিতে জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নীতি আয়োগের এই বৈঠকে প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংও যাননি।
মোদি বৈঠকে বলেন, প্রতিটি রাজ্যকে জেলা স্তর থেকে নিজেদের গড় জাতীয় উৎপাদন বাড়ানো ও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর টার্গেট নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশের জিডিপি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান অঙ্গ হল রফতানি বাড়ানো। এজন্য কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।
Facebook Comments