সড়ক আটকে প্রতি শুক্রবার মুসলমানদের জুমার নামাজ আদায়ের বিরোধিতায় এবার আন্দোলনে নামল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার বিজেপির নেতাকর্মীরা। যার অংশ হিসেবে তারা রাস্তা আটকিয়ে হনুমান চালিশা (মন্ত্র) পাঠ করে সড়কে মুসলিমদের জুমার নামাজ আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) হাওড়ার বালিখালে বজরংবলি মন্দির প্রাঙ্গণে শতাধিক বিজেপি কর্মী রাস্তায় বসে হনুমান চালিশা পাঠ করেন।
এ দিকে আন্দোলনরত লোকদের উদ্দেশ্যে বিজেপি যুব মোর্চার হাওড়া জেলা সভাপতি ওম প্রকাশ সিং বলেন, ‘যতদিন না পর্যন্ত সড়ক আটকে নামাজ পড়া বন্ধ হবে, ততদিন আমরাও রাস্তা আটকে হনুমান চালিশা পাঠ করব। মানুষের চলাচলের জন্য বানানো সড়ক আটকে তাদের দুর্ভোগে ফেলার অধিকার কারও নেই। সেটা যেই ধর্মেরই হোক না কেন। ধর্মীয় রীতি পালনের থাকলে তা বাড়িতে করাই ভালো। সড়ক আটকে মানুষকে বিপদে ফেলা উচিত নয়।
জেলা বিজেপির এ সভাপতি আরও বলেন, ‘ধর্মীয় আচার আচরণ পালনের প্রকৃত স্থান হল মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার কিংবা চার্চ। যেদিন থেকে এই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, সেদিন থেকে আমাদের সংস্কৃতি পুরোপুরি নষ্ট হতে বসেছে। দিদি আসার পর থেকেই প্রতি শুক্রবার একটি সম্প্রদায়ের মানুষ জিটি রোড বন্ধ করে নামাজ আদায় করছে।’ যে কারণে এরই প্রতিবাদে প্রতীকী আন্দোলন স্বরূপ এ দিন বিজেপি যুব মোর্চার পক্ষ থেকে জিটি রোড বন্ধ করে পাঁচ বার হনুমান চালিশা পাঠ করা হয়।
জেলা বিজেপির নেতাকর্মীদের দাবি, বাংলায় হিন্দুরা যেমন দুর্গাপূজাসহ অন্যান্য পূজা করে, মুসলমানরাও তেমনই তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। তবে শুক্রবারের মতো এমন ব্যস্ত একটা দিনে কোনো মতে সড়ক আটকানো যাবে না। ভবিষ্যতে এই সড়ক আটকে নামাজ পড়া বন্ধ না হলে, প্রত্যেক মঙ্গলবার জেলার সকল হনুমান মন্দির চত্বরে রাস্তা বন্ধ করে হনুমান চালিশা পাঠ করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন আগত নেত্রীবৃন্দ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেপির গতকালের প্রতীকী আন্দোলনে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা হয় জিটি রোড। এই সময় মোট পাঁচ বার হনুমান চালিশাও পাঠ করেন আগতরা। আর এতেই সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
হনুমান চালিশা পাঠ শেষে উপস্থিত বিজেপি নেতারা বলেন, মাত্র পাঁচ মিনিটে যদি এমন যানজট হয়; তাহলে ভাবুন সারা রাজ্যে শুক্রবার দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাস্তা আটকে রাখলে কী অবস্থা হয়? এর প্রতিক্রিয়ায় হাওড়া জেলার (সদর) তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘আমরা আমাদের জন্মের অনেক আগে থেকে এই নামাজ দেখে আসছি। বিজেপি এর সঙ্গে অযথাই তৃণমূলকে জড়ানোর চেষ্টা করছে। এটা সম্পূর্ণই একটা ধর্মীয় রীতি। বিজেপি কেবল এসবের মাধ্যমে রাজ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইছে, যা কখনই মেনে নেওয়া হবে না।’
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments