পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে দোষী সাবস্থ হয়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তবে তাকে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ। মরিয়মের দাবি, বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে আপস করা হয়েছে। চাপের মুখে পড়ে শাস্তি দেয়া হয়েছে তার বাবাকে। প্রমাণ হিসেবে শনিবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেন মরিয়ম। পরে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সেটি সোশ্যাল মিডিয়াতেও পোস্ট করে। তাতে পিএমএল-এন নেতা নাসির বাটের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় ইসলামাবাদ আদালতের বিচারপতি আরশাদ মালিককে। দু’জনের মধ্যে কথাবার্তা চলাকালীন আরশাদ জানান, বাইরে থেকে চাপ আসছিল। ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল তাকে, যেন কোনোভাবেই বেঁচে যেতে না পেরেন নওয়াজ শরিফ। শেষাবধি চাপের মুখে নতিস্বীকার করেন তিনি। দুর্নীতির সপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও নওয়াজ শরিফকে কারাবাসের সাজা শোনান।
ভিডিওটি নিয়ে শনিবার লাহৌরে এক সাংবাদিক বৈঠকও করেন মরিয়ম নওয়াজ। সেখানে তিনি জানান, আদালতে ন্যায্য বিচার পায়নি তার বাবা।
মরিয়ম আরো বলেন, বাবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আর্থিক ক্ষতি এবং বেআইনি লেনদেনের কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে সাফ জানিয়েছেন বিচারপতি মালিক। একটি ব্যক্তিগত ভিডিও নিয়ে তাকে লাগাতার ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল। নিরুপায় হয়ে বাবাকে ওই সাজা শোনান তিনি।
নওয়াজ শরিফকে সাজা শোনানোর পর ওই বিচারপতি একাধিকবার আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছেন বলেও দাবি করেন মরিয়ম। ভিডিওটি সামনে আসার পর তার বাবাকে আর জেলে রাখা ঠিক হবে না বলে মনে করেন মরিয়ম। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্টে নওয়াজ শরিফের জামিনের মামলায় ভিডিওটি ব্যবহার করা হতে পারে।
তবে যে ভিডিওকে হাতিয়ার করে নওয়াজ শরিফের মুক্তির দাবি তুলছেন মরিয়ম, সেটিকে বিকৃত করে প্রকাশ করা হয়েছে বলে পাল্টা দাবি তুলেছে ইমরান খান সরকার।
তাদের দাবি, বিকৃত ভিডিও প্রকাশ করা অপরাধ। এতে বিচার ব্যবস্থার ওপর আঘাত হানা হয়েছে। ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখারও দাবি তুলেছে তারা।
ভিডিওটি বিকৃত করা হয়েছে বলে রবিবার দাবি করেন বিচারপতি আরশাদ মালিকও। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, আমি রাওয়ালপিণ্ডির বাসিন্দা। বিচারপতি হওয়ার আগে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছি সেখানে। নাসির বাটও সেখানকারই বাসিন্দা। অনেকদিনের পরিচয় আমাদের। তার ভাই আবদুল্লাহর সঙ্গেও একাধিকবার সাক্ষাৎ হয়েছে। মরিয়ম যা বলছেন, তা মোটেও সত্য নয়। নাসিরের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছিল। তারই কিছু অংশ বিকৃত করে সামনে আনা হয়েছে।
মামলার শুনানি চলাকালীন নওয়াজ শরিফের পরিবারই বরং তাকে ঘুষ দিতে চেয়েছিল বলেও দাবি করেন আরশাদ মালিক। চাপে পড়ে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে রায় দেয়ার অভিযোগ খারিজ করে দেন তিনি।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments