দিন কয়েক আগেই বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা জলবন্টন চুক্তি করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি আত্রেয়ী নদী শুকিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী করলেন বাংলাদেশকে।
মমতা বলেন, বাংলাদেশ তাদের দিকে আত্রেয়ী নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করেছে। আত্রাই সে কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে এপার বাংলায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতে, সীমান্তের ওপারে আত্রেয়ী নদীতে বাঁধ দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মাত্র এক হাজার দু’শ মিটার দূরে মোহনপুর এলাকায় ওই বাঁধের কারণে দক্ষিণ দিনাজপুরের সমজিয়া থেকে ফতেপুর, দীর্ঘ প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আত্রাই নদীর নাব্যতা একেবারেই কমে গেছে। মমতার দাবি, আমি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ নিয়ে কথা বলেছি, চিঠি লিখেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। যদিও আত্রেয়ী নিয়ে আজ মমতা মুখ খোলেন, তিস্তার জলের ওপর বাংলাদেশের ন্যায় অধিকার বারবার অস্বীকার করেছেন তিনি। কার্যত তার কারণেই আটকে আছে তিস্তার জলবন্টন চুক্তি। গত সপ্তাহে তিনি আবার বলেন, তিস্তা থেকে জল দেয়ার পরিস্থিতি নেই।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারের মতে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও কৃষি-নির্ভর এই জেলার অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়েছে। এরই মধ্যে জল না থাকায় সেচ দপ্তরের দুই শতাধিক রিভার লিভার মেশিন বন্ধ হওয়ার মুখে। আত্রেয়ী নদীর গতিমুখ বরাবর কংক্রিটের বাঁধ দেয়ার ঘটনায় প্রায় বছর খানেক ধরে পরিবেশপ্রেমীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। সূত্র অনুযায়ী, আত্রেয়ী নদী দক্ষিণ দিনাজপুরের অন্যতম প্রধান জল। নদীর দুই পারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শতাব্দী প্রাচীন কুমারগঞ্জ পতিরাম চকভৃগু ও বালুরঘাটের মতো জনবসতি গড়ে উঠেছে। বছর পাঁচেক আগেও, বিশেষ করে খরা মওসুমে জেলার অন্যান্য নদীগুলো শুকিয়ে গেলেও আত্রেয়ী কিন্তু জলপূর্ণ থাকত। সম্প্রতি এই নদীর জল কমে গেছে। তিস্তার মতো আত্রাই নদীর ব্যাপারেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনার দাবি তুলেছেন জেলার মানুষ। তবে সেই আলোচনার সাথে, তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের দাবি মানা অনেক জরুরী বলে মনে করেন একজন নদী বিশেষজ্ঞ।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments