বর্ষাকালে আবহাওয়ার প্রভাবে শারীরিক নানান অসুবিধায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে ভাইরাল ফিভারে ভুগতে হয় অনেককেই। একটু বৃষ্টিতে ভিজলেও জ্বর ঝেঁকে বসতে পারে এই মৌসুমে। জ্বরের এই প্রকোপ বেশ কিছুদিন ধরেই চলে। কোনো কাজই ঠিক মতো করা হয়ে ওঠে না এই সময়ে। আবহাওয়ার এই বদলে যাবার সময়ে আরও বেশ কিছু রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। হালকা থেকে মাঝারি জ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, গায়ে ব্যথা, শরীর দুর্বল হয়ে পড়া এমনকি সর্দি কাশিতেও পড়তে পারেন এই সময়ে। আপনার শরীরে এই সমস্যাগুলো থাকলে বুঝতে হবে এগুলো হলো ভাইরাল ফিবারের লক্ষণ। ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই রোগের থেকে সুস্থ হওয়া যায়। চিকিৎসকদের মতে, ভাইরাল ফিভারের চিকিৎসার জন্য কোনো অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কোনো প্রয়োজন নেই। ভাইরাল ফিভারের হাত থেকে বেঁচে থাকতে কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে দৈনন্দিন রুটিনে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কাজ করলে ভাইরাল ফিভার থেকে বেঁচে থাকা যাবে।
তরল খাবার :
গরমের এই সময়ে বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে জল পান করতে হবে বেশি পরিমাণে। ঘামের সাথে এই সময়ে শরীরের অনেক জল বের হয়ে যায়। এই অভাব পূরণ করতে বেশি বেশি জল পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন। জল ছাড়াও বিভিন্ন ডিটক্স ড্রিঙ্কস পান করতে পারেন এই সময়ে।
পুষ্টিকর খাবার :
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে বেশি তৈলাক্ত এবং ফাস্টফুড খাবার এড়িয়ে চলাই এই সময়ে স্বাস্থের জন্য উপকারী। প্রচুর ফল-মূল, শাক সবজি খাবার অভ্যাস গড়ে তুলুন । এটি আপনার দেহকে বেশ সুস্থ রাখবে। তাছাড়া আপনার শরীরের অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও সুরক্ষা করবে।
ভাইরাল ফিভার আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকুন :
ভাইরাল ফিভার একটি ছোঁয়াচে রোগ। একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে এটি ছড়িয়ে যায়। তাই যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন এই রোগে আক্রান্তদের থেকে নিরাপদ থাকতে। যেসব মাধ্যমে এক দেহ থেকে আরেক দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়ে যেতে পারে সেগুলোর থেকে সাবধানতা অবলবন করুন।
ভিড় এড়িয়ে চলুন :
ভাইরাল ফিভার অনেক ক্ষেত্রে বেশি জনসমাগমের মধ্যে থাকলে হতে পারে। আগেই বলা হয়েছে এটি একটি ভাইরাস জ্বর। ছোঁয়াচে এই রোগটির থেকে বেঁচে থাকতে তাই ভিড় এড়িয়ে চলুন। যদি আপনার ভাইরাল ফিভার দেখা দেয় তবে চেষ্টা করুন বাইরে খুব একটা না যেতে। আপনার ব্যবহার্য জিনিসপত্র অন্যকে ধরতে দিবেন না। বিশেষ করে রুমাল বা গামছা জাতীয় কাপড় কাউকে ধরতে দেবেন না।
অ্যান্টিবায়োটিক এড়িয়ে চলুন :
জ্বরের মাত্রা বেশি হলেও চিকিৎসকরা এই রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক না ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এই জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। গা মুছিয়ে দিলে এই জ্বর থেকে বেশ ভালো আরাম পাওয়া যায়। ৫-৭ দিনের মধ্যে এই জ্বর ছেড়ে যাবার কথা। যদি এর মধ্যে না ছাড়ে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ভাইরাল ফিভারের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকাই নেই। বরং অযথা অ্যান্টিবায়োটিক খেলে আপনার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যাবে, যার ফলে আপনার শরীরে ভিটামিন বি ও ভিটামিন কের অভাব দেখা দিতে পারে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতে পারে ডায়েরিয়া।
ভাইরাল ফিভার ছাড়াও বর্ষাকালে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। বাসা বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments