রাশিয়া-আমেরিকার থেকে আরও ১১৪টি রাফাল যুদ্ধ বিমান ক্রয়ের চুক্তি করেছে মোদী প্রশাসন। ভারতের বিমান বাহিনীতে আগামী মাসেই রাফাল যুদ্ধবিমান যুক্ত হতে যাচ্ছে, ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি পুরোপুরি সম্পূর্ণ হতে ১০ বছর লেগে যায়, তাই এবার তেমন বিলম্ব না করে দ্রুত যুদ্ধবিমান ক্রয়ের পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। ফ্রান্সের রাফাল থেকে বিমান পেতে এত বিলম্ব হওয়ায় মিগ-২১ সিরিজের যুদ্ধবিমানগুলোও ধাপে ধাপে বাতিল করার প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে। কিন্তু, নতুন ১১৪টি যুদ্ধবিমান কেনার ক্ষেত্রে আর তার পুনরাবৃত্তি চায় না ভারতীয় বিমান বাহিনী। তাই দ্রুত যুদ্ধবিমান হাতে পাওয়ার বিষয়টিতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যেই ১,৫০০ কোটি টাকার চুক্তির জন্য যুদ্ধবিমান প্রস্তুতকারী দেশগুলো এবং সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে।
রাফাল চুক্তির সময়ই বিমান বাহিনী জানিয়েছিল, তাদের দরকার ১২৬টি যুদ্ধবিমান। কিন্তু, সেই সময় ফরাসি সংস্থা রাফালকে বরাত দেয়া হয়েছিল ৩৬টি যুদ্ধবিমান। অন্য দিকে ধাপে ধাপে মিগ-২১ বাতিল করতে হবে এই বছরের মধ্যেই। সব রাফাল হাতে এলেও কিছুটা ঘাটতি থাকবে ভারতের বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানভাণ্ডারে। সব মিলিয়ে যু্দ্ধপ্রস্তুতিতে খামতি থেকে যাচ্ছে বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
গত ৫ই আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলে দেশটি প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে এক সাংঘর্ষিক অবস্থায় উপনীত হয়। চিরবৈরী পাকিস্তান ইতোমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জারি করে, উত্তেজিত হয়ে ওঠে নিয়ন্ত্রণ রেখা। যে কাশ্মীরকে নিয়ে ইতোমধ্যেই একাধিকবার যুদ্ধে জড়ায় ভারত, সেই কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার অর্থ যে যুদ্ধের পরিস্থিতিকে উস্কে দেয়া, তা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছে ভারত। একইসঙ্গে পরাশক্তি চীনের সঙ্গে এশিয়ায় টক্কর দিতে হলে তাদের সামরিক শক্তিকেও যে বাড়াতে হবে সেটাও নতুন এই যুদ্ধবিমান চুক্তির একটা কারণ।
দেড় হাজার কোটির এই চুক্তি করতে বোয়িং, লকহিড মার্টিনের মতো মার্কিন সংস্থা, রাশিয়ার ইউনাইটেড এয়ারক্র্যাফট এবং সাবের মতো সংস্থা রয়েছে ভারতের নজরে। এই সব সংস্থা এর আগেও মিডিয়াম মাল্টি রোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফটের (এমএমআরসিএ) টেন্ডারে অংশ নিয়েছে।
এই একাধিক সংস্থা ইতোমধ্যেই নানা ‘অফার’ নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিমানবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছে। এমনকি, মার্কিন সংস্থা ভারতে এফ-১৬ এবং এফ-১৬ জেট গোত্রের বিমান তৈরির ইউনিট খোলার প্রস্তাবও দিয়েছে। রাশিয়া সরকারের সঙ্গেও কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। তবে, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে, সব প্রস্তাব এবং পরিকল্পনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, এর বাইরেও আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সেগুলো অবশ্য স্পষ্ট করতে চায়নি দেশটি।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments