জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে পরবর্তীতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এবার সামনে এসেছে আসামের এনআরসি। যা নিয়ে ভারতজুড়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের ব্যাপক সমালোচনা। যেখানে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ জোটের অন্যরা ক্রমাগত বিজেপির সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। যার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে দেশটির বর্তমান ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার কথাও।
চলতি বছর ভারতের প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৬% নিচে থাকায় কাশ্মীর ও এনআরসি ইস্যুতে আর না ভেবে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিরোধী জোটের নেতারা। তবে এতো সমালোচকদের মধ্যেও ভারতের সর্ববৃহৎ মুসলিম সংগঠন জমিয়োতে উলামায়ে হিন্দকে পাশে পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এখন পর্যন্ত যা করেছেন তা ঠিকই করছেন বলে ইতোমধ্যে সাফ জানিয়ে দিলেন দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানি। তাছাড়া পাশাপাশি পাকিস্তান সরকারের কড়া সমালোচনাও করেছেন ভারতীয় মুসলিম সংগঠনটির এই নেতা।
মাহমুদ মাদানি বলেছেন, ‘পাকিস্তান এখন কাশ্মীরি জনগণের রক্ষাকবচ হিসেবে নিজেদের পরিচিত করে উপত্যকাকে ধ্বংস করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে মোদী সরকারের ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত একদমই সঠিক। কাশ্মীর থেকে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করা হলেও অঞ্চলটি আমাদেরই থাকবে। না তুলে নিলেও তা পুরোপুরি আমাদের। জম্মু ও কাশ্মীরের অধিবাসী মানেই ভারতীয়। তারা ভারতের বাহিরের কেউ নয়।’
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লিতে জমিয়োতে উলামায়ে হিন্দের আয়োজিত বার্ষিক সভায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের বন্ধন আগের চেয়ে আরও মজবুত হয়েছে। আর এভাবেই ভারতের সঙ্গে সার্বিক ঐক্য সৃষ্টি করে কাশ্মীরিদের উন্নতি লুকিয়ে আছে।’ পাকিস্তান উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন উসকে দিচ্ছে অভিযোগ করে মাহমুদ মাদানি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র কাশ্মীরকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে চায়। তারা আমাদের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চায়। যার কোনো সুযোগই মোদী সরকার দিবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘কাশ্মীরকে সব সময়ই ভারতের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে বিশ্বাস করে জমিয়োতে উলামায়ে হিন্দ। তাই কাশ্মীরে বর্তমান মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা। পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান ষড়যন্ত্রের ফলে কাশ্মীরের সাধারণ জনগণ আদতে কী চায় তা ভারতীয়দের কানে এসে পৌঁছায় না।’
কাশ্মীর ভীষণ জরুরি একটি বিষয়; কত অনুপ্রবেশকারী বর্তমানে এখানে রয়েছেন তা চিহ্নিত করতে সারা দেশে এনআরসি চালু করা প্রয়োজন। যদিও এই এনআরসি নিয়েও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কার্যক্রমটির মাধ্যমে কে আসল ভারতীয় আর কে অভারতীয় তা খুব সহজেই বেরিয়ে আসবে।’
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments