খাবারের অভাব কোনোদিনই ছিল না, আজও নেই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে। তবুও দেখা যাচ্ছে কোথাও যেন ঘটেছে ছন্দপতন। এ বিষয়ে এক বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ বলছেন, জঙ্গলে খাবারের অভাব নেই, বিশেষ করে বাঁদররা যেসব খাবার খায় সেগুলো তো যথেষ্ট পরিমাণে আছে। অন্যদিকে, কেওড়া হেতাল গাছের শ্বাসমূল ঠেসমূল এই সবই বানরদের খাবারের তালিকা রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মানুষের খাবারের বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে বাঁদররা।
কয়েকদিন আগে সজনেখালীতে দেখা গেল, ফেলে যাওয়া বিরিয়ানীর প্যাকেটের দিকে নজর বাঁদরদের। মা এবং বাচ্চা বানর চেটেপুটে খাচ্ছে সেই বিরিয়ানীর প্যাকেট। এমনকি ঢুকে পড়ছে ডাস্টবিনের মধ্যেও। অনেকেই মনে করছেন খেলাচ্ছলে পর্যটকদের দেয়া খাবার বানরদের জঙ্গল ছাড়ার প্রধান কারণ। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় বন বিভাগের কর্মকর্তারা। কারণ বাঁদরের বাঁদরামি সহ্য করতে না পারলে কামড় খেতে হচ্ছে পর্যটকদের। এ বিষয়ে প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের (ডব্লিউডব্লিউএফ) বাঁদর গবেষক ড. সঙ্গীতা মিত্র বলেন, ‘সহজলভ্য খাবার পেতে পেতে বাঁদর শুধু খাবারের অভ্যাসই বদলায়নি, সেই সঙ্গে নিজেদের বিপদও ডেকে আনছে। এর ফলে বাঁদর এবং মানুষ উভয়েই সমস্যায় পড়ছে। কারণ খাবার না পেলে তারা আঁচড় কামড় দিয়ে আক্রমণ করছে পর্যটকদের। ফলে বাঁদর থেকে মানুষের মধ্যে নানা অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে। আবার উলটোটাও হচ্ছে।’
পরিবেশবিদদের মতে, পর্যটকরাই মূলত সুন্দরবন এসে বাঁদরের খাবারের অভ্যাসে পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তবে এটি শুধু সুন্দরবনের নয়, গোটা দেশের সমস্যা।
Facebook Comments