সোমবার সকালে নেহাতই কৌতুহলবশে কালভার্টের নীচে উঁকি দিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে সাফানগরের পাকুড়তলার বাসিন্দারা। উঁকি দিয়ে তাঁরা যা দেখতে পান, তাতে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই কালভার্টে নীচে পড়েছিল এক মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ। সেখান থেকেই ধোঁয়া বেরোচ্ছিল। খবর দেওয়া হয় কুমারগঞ্জ থানায়। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের পর মৃতদেহটি কালভার্টের নীচে ফেলে দিয়েছে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ওই মহিলাকে যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নলি কেটে খুন করা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে সে বিষয়ে পুলিশের কোনও সন্দেহ নেই বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু খুনের আগে কি ধর্ষণ করা হয়েছিল? নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা। উদ্ধার অগ্নিদগ্ধ যুবতীর নাম-পরিচয় জানা গেল। জানা গিয়েছে, বছর সতেরোর মৃত যুবতীর নাম প্রমিলা বর্মণ। সে গঙ্গারামপুর থানার উদয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ছিল। গতবছর সে স্থানীয় ফুলবাড়ি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল। রবিবার দুপুর ১টা থেকে প্রমিলা নিখোঁজ ছিল। সে ফুলবাড়ীতে চাদর কিনতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর থেকে তার ফোন সুইচ অফ ছিল। বিকেল থেকে রাতভর গোটা এলাকায় খোঁজাখুঁজি করলেও তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। অবশেষে এদিম বিকেলে এলাকায় এক যুবতীর অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এরপর খবর পেয়ে, বালুরঘাট পুলিশ মৃতদেহ মর্গে নিয়ে আসেন। মৃতার ভাই বিশ্বজিত্ বর্মণ সহ পরিবারের লোকেরা অভিযোগ করেছেন, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে গলার নলি কেটে দেওয়া হয়েছিল। এরপর পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ এক যবতীকে ধর্ষন করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল রাত্রে। তাদের আজ বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের নাম ১. মাহাবুর মিয়া, ২. গৌতম বর্মন, ৩. পংকজ বর্মন। অভিযুক্ত মাহাবুর মিয়ার বাড়ি মৃত যুবতী প্রমিলা বর্মনের গ্রামের অর্থাত্ গঙ্গারামপুর থানার উদয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চগ্রাম এলাকায়। গৌতম এবং পঙ্কজ এর বাড়ি জেলার তপন থানার কৃষ্ণবাটি এবং মোশরা পাড়া এলাকায় । বাড়ি থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে কুমারগঞ্জ থানার সাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলতোর এলাকায় ধর্ষণ করে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
হায়দরাবাদের মহিলা পশুচিকিত্সককে ধর্ষণ ও খুনের মতই ভয়ানক ঘটনা। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে। মেয়েটিকে ধর্ষণ। তারপর পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া।
হায়দরাবাদ নিয়ে ঝড় উঠেছিল।
কুমারগঞ্জে খবরটাই উধাও।
প্রতিবাদ নেই।
বুদ্ধিজীবীদের মিছিল নেই।
কেন এই বৈপরীত্য?
কেন ” জাস্টিস ফর প্রমীলা” ঝড় উঠছে না?
আমরা কি শুধু দেশ নিয়েই বিপ্লব করব? ঘরের দিকে দেখব না?
Facebook Comments