সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। রোববার (৭ মার্চ) কলকাতার ব্রিগেডে বিজেপির সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মশিবিরে যোগ দেন অভিনেতা। বেশ কয়েকমাস ধরে জল্পনা চলছিল মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপিতে যোগ দেন কিনা। এবার সেই জল্পনার অবসান হলো। নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড সভামঞ্চে বিজেপিতে যোগ দিলেন তিনি। শনিবারেই মুম্বাই থেকে কলকাতায় আসেন মিঠুন চক্রবর্তী। ছিলেন বেলগাছিয়ার একটি হোটেলে। রাতেই বিজেপির মহাসচিব কৈলাস বিজয়বর্গীয় মিঠুনের সঙ্গে দেখা করেন। তখনই এ মহাতারকার বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়।
রোববার বেলগাছিয়া থেকে ব্রিগেডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মিঠুন চক্রবর্তী। সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানা সাজে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে ব্রিগেডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। মিঠুন চক্রবর্তীর গাড়ি ঘিরে বিজেপির কর্মীদের উন্মাদনা তুঙ্গে। ব্রিগেডে পৌঁছে একেবারে মঞ্চে উঠেছেন তিনি। আজ ব্রিগেডের মঞ্চে উঠে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
ব্রিগেডের মঞ্চে মিঠুনের ভাষণের আগাগোড়া ছিল নাটকীয়। তাকে দেখে চিৎকার করতে শুরু করেন উচ্ছ্বসিত বিজেপি কর্মী-সমর্থক। তা শুনে মিঠুন বলেন, ‘থোড়া খামোশ হো যাও, বোলনে তো দে।’ অর্থাৎ, একটু চুপ করুন, আমাকে বলতে দিন। শ্রোতারা চুপ করেন। এরপর নিজের উত্থানের ইতিহাস টেনে এনে আবেগে ঘা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বলেন, ‘আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। আমি আসছি, এমন একটা জায়গা থেকে যার দু’দিকটাই অন্ধ। আমি যেখানে থাকতাম, সেই জায়গার ঠিকানা লিখতে হতো— জোড়াবাগান থানার পিছনে। কিন্তু সে দিন স্বপ্ন দেখেছিলাম, আমি জীবনে কিছু করব। কিন্তু এই স্বপ্নটা দেখিনি যে, এই মঞ্চে, যেখানে দেশের বড় বড় নেতা রয়েছেন, যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আসছেন, সেখানে আমি উপস্থিত থাকব। এটা স্বপ্ন নয়তো কী?’
রাজনাীতিতে আসার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মিঠুন বলেন, ‘আর একটা স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম যে, আমি গরিবদের জন্য কিছু করব। আজ মনে হচ্ছে, কোথাও যেন সেই স্বপ্নটা দেখতে পাচ্ছি। এটা হবেই। কারণ স্বপ্ন শুধু দেখার জন্য নয়। তা সফল হওয়ার জন্যই আসে। কেউ যদি হৃদয় দিয়ে দেখে স্বপ্ন সফল হবেই।’ নিজেকে ‘গর্বিত বাঙালি’ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, রানি রাসমণি আসলে বাঙালি। যারা মানুষের হক কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে, সেখানে আমাদের মতো কিছু লোক বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে।’ মিঠুনকে কাছে পেয়ে তার ছবির বিখ্যাত সংলাপ শুনতে চান অনেকেই। তা বুঝতে পেরে তিনি বলেন, ‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে, এই ডায়লগটা চলবে।’
Facebook Comments