এক মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে ভরতি থাকার পর বাস্তব জগত্ থেকে অনেক দূরে চলে গেলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা সংস্কৃতি জগতের স্তম্ভস্বরূপ ব্যক্তিত্ব সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয় রবিবার। বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রায় ৪১ দিন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন। এ দিন বেলভিউ ক্লিনিকের তরফে জানানো হয়, ১২.১৫টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভরতি করা হয় সৌমিত্রকে। দিন দশেকের মধ্যেই তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এর পরে বর্ষীয়ান অভিনেতার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও কোভিড এনসেফেলোপ্যাথির কারণে তাঁর স্নায়ুতে প্রভাব পড়ে। তার পর থেকেই প্রায় অচেতন অবস্থাতেই রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। শুক্রবার ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
শনিবার আসে দু:সংবাদের ইঙ্গিত। চিকিত্সকেরা সমস্ত আশাই কার্যত ছেড়ে দেন। জানান, আশ্চর্যজনক কিছু না ঘটলে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা প্রায় অসম্ভব। মাল্টিঅর্গান ফেলিওর এর মত অবস্থা তৈরি হয়েছে। হার্ট, লিভার, কিডনি এবং ফুসফুস মূলত প্রায় কাজ করছে না। ক্যান্সারের পাশাপাশি প্রেশার-সুগার-সিওপিডির মতো কো-মর্বিডিটির কারণে সৌমিত্রবাবুকে নিয়ে চিন্তা অনেক বেশি ছিল।
সংক্ষেপে সৌমিত্র
জন্ম: ১৯ জানুয়ারি, ১৯৩৫
মৃত্যু: ১৫ নভেম্বর, ২০২০
অভিনেতা (চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাটক এবং যাত্রা), নাট্য নির্দেশক, আবৃত্তিকার, কবি, নাট্যকার এবং অনুবাদক, ইত্যাদি। বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্রকার সত্যজিত্ রায়ের সঙ্গে ১৪টি ছবি করেছিলেন সৌমিত্র। ‘অপুর সংসার’-দিয়ে পথচলা শুরু।
অন্যতম কয়েকটি চলচ্চিত্র
অপুর সংসার, ক্ষুধিত পাষাণ, দেবী, ঝিন্দের বন্দি, সাত পাকে বাঁধা, চারুলতা, বাক্স বদল, বাঘিনী, তিন ভুবনের পারে, অরণ্যের দিনরাত্রি, প্রথম কদম ফুল, বসন্ত বিলাপ,সোনার কেল্লা, জয় বাবা ফেলুনাথ, গণদেবতা, হীরক রাজার দেশে, কোণি, ইত্যাদি। তবে কিংবদন্তি অভিনেতার জনপ্রিয় ছবির তালিকা আরও দীর্ঘ।
নির্দেশিত নাটক
তাপসী, নামজীবন, রাজকুমার, ফেরা, নীলকন্ঠ, ঘটক বিদায়, দর্পণে শরত্শশী, চন্দনপুরের চোর, টিকটিকি, প্রাণতপস্যা, শেষের কবিতা(শ্রুতিনাটক)
পুরস্কার
২০০৪ – পদ্ম ভূষণ, ২০১২ – দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, ২০১৭ – লিজিওন অব অনার (ফ্রান্স), বিএফজে সেরা অভিনেতা পুরস্কার-৮ বার
Facebook Comments