রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে সাময়িক যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। মস্কোতে যুযুধান দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের মধ্যে টানা ১০ ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠকের পর শনিবার এ কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। আগামী ১০ অক্টোবর মধ্যরাত থেকেই সাময়িক যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হচ্ছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখের দখলদারি নিয়ে পড়শি দুই দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই সপ্তাহের লড়াইয়ে তিনশোর বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু। ১৯৯৪ সালের পরে এই অঞ্চলে এত বড় সঙ্ঘাত আর দেখা যায়নি। যুদ্ধের জন্য আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পক্ষ থেকে প্রতিপক্ষ শিবিরের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে অস্ত্রবিরতি চুক্তির আগে দুই দেশের মধ্যে লড়াইয়ে ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ ঝরেছিল। ওই লড়াইয়ের পরে আর্মেনিয়ার মদতে নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চল দখল করে নেয় আর্মেনিয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ২০১৬ সালে ওই এলাকা ঘিরে ফের দু’দেশের লড়াইয়ে ১১০ জন প্রাণ হারান।
জাতিসঙ্ঘ সহ বিশ্বের একাধিক দেশ যুদ্ধ বন্ধের জন্য অনুরোধ জানালেও তাতে প্রথমে সাড়া দেয়নি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের শীর্ষ নেতারা। শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার দুই দেশের প্রেসিডেন্টকে ফোন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শান্তি ফেরাতে মস্কোয় দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেন। তাঁর সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে শুক্রবার মস্কোয় বৈঠকে বসেন আর্মেনিয়ার বিদেশ মন্ত্রী জোহরাব মাতসাক্যানিয়ান ও আজারবাইজানের বিদেশ মন্ত্রী জেহুন বেরামভও। দু’দেশের মধ্যে বিরোধ মেটাতে মধ্যস্থতার ভূমিকায় ছিলেন রুশ বিদেশ মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। শেষ পর্যন্ত ১০ ঘন্টার বৈঠকে সমাধান সূত্র বের হয়। সাময়িক যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয় যুযুধান দুই দেশ।
Facebook Comments