রাজ্যে ফের গণধর্ষণের ছবি। ঘটনাস্থল বীরভূমের শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত আদিত্যপুর। বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গণধর্ষণের কথা সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে। এমনকি কয়েক দিন আগেই বীরভুমের বোলপুর থানার অন্তর্গত সিয়ান মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়। তার কিছুদিনের মধ্যে ফের গণধর্ষণের ছবি দেখা গেল খোদ বীরভূমেই।
জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতনের আদিত্যপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা ৫ জনের হাতে গণধর্ষণের শিকার হন। অভিযোগ, স্থানীয় চড়ক মেলা থেকে প্রথমে তাঁকে অপহরণ করা হয় এবং তারপর নাবালিকার ওপর পাশবিক অত্যাচার চালায় পাঁচ অভিযুক্ত। নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে করা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে নাবালিকার পরিবার জানিয়েছে, আদিত্যপুরে চড়কের মেলা বসেছিল। সেই মেলাই দেখতে গিয়েছিলেন নাবালিকা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একটি ছেলেও। এরপর বাকি বন্ধুদের আসার অপেক্ষায় বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েছিলেন মেলায়। বন্ধুদের ফোন করলেও মেলা প্রাঙ্গণে সজোরে মাইক চলার কারণে ফোনে ঠিকঠাক কথা শোনা যাচ্ছিল না। যাতে ফোনের আওয়াজ সঠিকভাবে শোনা যায় তাই মাইকের আওয়াজ থেকে বাঁচতে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে একটু দূরে সরে যান তাঁরা। এরপরই ঘটে বিপদ।
হঠাৎই তাঁদের সামনে চড়াও হয় পাঁচজন। এরপর নাবালিকা ও তাঁর বন্ধুকে ওই পাঁচজন মিলে মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল থেকে কোনওক্রমে পালিয়ে যান নাবালিকার সঙ্গী। কিন্তু রাস্তা অন্ধকার থাকায় তার সুযোগ নিয়ে পাঁচ ধৃতর পাশবিক অত্যাচারের শিকার হন নাবালিকা। মেয়েটিকে কোপাই নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর শুক্রবার নাবালিকার পরিবারের সদস্যরা শান্তিনিকেতন থানায় খবর দিলে বোলপুর মহকুমার এসডিপিও অভিষেক রায় ও শান্তিনিকেতন থানার ওসি দেবাশীষ পন্ডিত সিয়ান মুলুক গ্রামে যান এবং ওই নাবালিকাকে ভর্তি করেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে।
ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী স্বয়ং ওই গ্রামে গিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিনজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। ওই তিন অভিযুক্তকে জেরা করে ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা যুক্ত থাকতে পারে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি নাবালিকা ও তাঁর পরিবার পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বক্তব্য জানিয়েছেন। তবে পরিবার সূত্রে দাবি, তাঁরা বা তাঁদের পরিবারের মেয়ে কেউই ধর্ষকদের চেনেন না।
Facebook Comments