বিক্ষোভ মিছিলে রাস্তায় নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ছিল মিছিলের দ্বিতীয় দিন। এদিন মিছিল শুরু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ৮-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে। মিছিল শুরুর আগে মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৯০৫ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডান্ডা নিয়ে পথে নামেননি। তিনি পথে নেমেছিলেন রাখি নিয়ে। আমি সবাইকে একই আবেদন করছি। আপনারা পথে ডান্ডা নয়, রাখি নিয়ে নামুন। মমতা বলেন, আপনারা দেখছেন না বাজারের অবস্থা কি? বাজার জ্বলছে, দিল্লিতে পেঁয়াজ ২০০ টাকা। ওদের রাজত্বে বাজার জ্বলছে, মানুষ জ্বলছে, গ্রাম জ্বলছে, শহর জ্বলছে, দেশ জ্বলছে। আর এসব থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে বিল পাশ করাচ্ছে।
তিনি বলেন, মোদী বলছেন পোশাক দেখে নাকি বোঝা যায় কারা দাঙ্গা করছে? আমার পোশাক দেখলে কি বোঝা যায় আমি কোন ধর্মের? পোশাক দেখে রাজনীতি করছেন? ‘মনে রাখবেন, পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের পাশে সংখ্যাগুরুরা আছে। আগুন কখনো কোনো সম্প্রদায় দেখে লাগে না। এর জ্বলন্ত প্রমাণ হলো, আসামে ১৯ লাখ হিন্দুর নাম বাদ দিয়ে এনআরসি তালিকা করা হয়েছে। এতে বুঝবেন আগুন প্রতিবেশীর গায়ে লাগলে, সে আগুন আপনার গায়েও লাগবে।’
‘এত বছর ধরে আন্দোলন করছি। এখন আমার পরিচয় দিতে হবে? আমার মায়ের জন্ম কবে? কোথা থেকে এসেছি? কোথায় পাবো এসব? আগে ঘরে ঘরে ডেলিভারি হতো। এখন হাসপাতালে জন্ম হয়। এখন বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। কোথা থেকে দেবো আমার মায়ের জন্মদিন।’ ‘এখন ওরা বলছে মন্দির গড়বে। মসজিদ ভাঙবে। শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার করছে। কী চান আপনারা? আমি সবাইকে বলবো বিজেপির চক্রান্ত ও ছলনার শেষ নেই। তাই যেখানে আগুন দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে নিভিয়ে দিন। এ আগুন বাড়তে দেবেন না। শান্তি বজায় রাখুন।’
মমতা আরও বলেন, আমি সিএএ এবং এনআরসির প্রতিবাদ করছি ও করবো। সবাইকে বলবো আমার মতো গায়ে ব্যাজ লাগিয়ে এর প্রতিবাদ করুন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মিছিলের ঘোষনা করেন। এদিন মমতার সঙ্গে দেখা যায় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান, পরিচালক গৌতম ঘোষ, অভিনেতা সোহম সহ পশ্চিমবাংলা ক্রীড়াবিদদের। এছাড়া মিছিলে পা মেলান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সাধারণ জনগণ। এদিনের মিছিল যাদবপুর থেকে শুরু হয়ে ঢাকুরিয়া ব্রিজ হয়ে গোলপার্ক, গড়িয়াহাট রোড, রাসবিহারী ধরে ভাবনীপুরের যদুবাবুর বাজারে শেষ হয়।
Facebook Comments