এবার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সরাসরি সম্প্রচারে বিধি-নিষেধ আরোপের চিন্তা করছে ফেসবুক। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলার পুরো ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করেছিলেন শ্বেতাঙ্গ এক যুবক। এই ভয়াবহ ঘটনার পর থেকেই সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। এবার তারা ‘লাইভ-স্ট্রিমিংয়ে’ নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা করেছে।
ফেসবুকের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ শনিবার এই বিষয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডকে এক চিঠি লেখেন। চিঠিতে লেখা হয়, লাইভে কে আসতে পারবে, কে পারবে না কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে বিষয়ে ভাবছেন। শেরিল স্যান্ডবার্গ চিঠিতে আরও লেখেন, ফেসবুকের মতো একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কীভাবে এমন ভয়ানক হামলার ভিডিও প্রচারে ব্যবহার করা হলো, তা নিয়ে আপনাদের অনেকেই যৌক্তিক প্রশ্ন তুলেছেন। এক্ষেত্রে অনেকে আমাদের আরও বেশি ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন। আমরা তাদের সঙ্গে একমত। তিনি জানান, কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, এমন বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কে কে সরাসরি সম্প্রচারে যেতে পারবেন আর কে পারবেন না, সে বিষয়ে ইতোমধ্যেই বিধি-নিষেধ আরোপ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। স্যান্ডবার্গ এ নীতিমালায় কোনো পরিবর্তনের ঘোষণা করেননি। তবে ফেসবুক লাইভের জন্য নিয়ম-কানুন জোরদার এবং এই প্ল্যাটফর্মে বিদ্বেষমূলক কন্টেন্ট মোকাবেলায় কীভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তিনি সে বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন।
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ইতোমধ্যেই শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের সমর্থন, প্রশংসা ও প্রতিনিধিত্বমূলক পোস্ট ব্লক করার ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেন্টন টারান্ট হামলা চালায়। নির্মম এই ঘটনায় ৫০ জন মুসলিম নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়। টারান্ট এই হামলার পুরো ঘটনা ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে। আর সাথে সাথেই বিশ্বব্যাপী সে হামলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় ফেসবুক তোপের মুখে পড়ে। তারা ওই হামলার প্রায় ১৫ লাখ ভিডিও সরিয়ে ফেলার কথা জানিয়েছে। এমনকি নিজেদের ব্যর্থতাও তারা স্বীকার করে নিয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ হামলার তদন্তে নিউজিল্যান্ড পুলিশকে সহায়তা করার ঘোষণাও করা হয়েছে।
Facebook Comments