সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বিরুদ্ধেই এবার যৌন হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩৫ বছর বয়সী এক নারী আদালতে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগটি আনেন। জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্বরত সেই নারী আদালতের ২২ বিচারপতির কাছে এই অভিযোগের বিষয়টি লিখিতভাবে জানান। সূত্র অনুসারে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের আমলে আনেন। মূলত এর পরেই অভিযোগটি শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়। যদিও সেই বেঞ্চটির নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি গগৈ নিজেই। এতে তিনি ছাড়াও তিন সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ সেই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং সঞ্জীব খান্না। পরবর্তীতে মামলাটির রায় দিবেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র।
শনিবার সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালতে শুনানিটি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘এ সব অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য আমার যতটা নিচে নামার প্রয়োজন, আমি ততটা নিচে নামতে পারব না। গত ২০ বছর যাবত চাকরির পর একজন প্রধান বিচারপতির কি এটাই প্রাপ্য ছিল? এই সব কিছুর জন্য তো দেশের বিচারব্যবস্থাই সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে।’ তিনি আক্ষেপ করে এও বলেছেন, ‘২০ বছরের ক্যারিয়ারে আমাকে এমন অভিযোগের সম্মুখীন হতে হবে তা আমি কখনোই ভাবিনি। আমার পিওনের অনেক সম্পত্তি রয়েছে, শুধু আমারই নেই।’ এ দিকে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে সেক্রেটারি জেনারেল সঞ্জীব সুধাকর বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সেই নারীর আনিত অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
লিখিত অভিযোগ পত্রে সেই নারী রঞ্জন গগৈর বিরুদ্ধে বলেন, ‘গত বছরের ১০ ও ১১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণের দিন কয়েক পরেই নিজের বাড়িতে আমার শ্লীলতাহানি করেন রঞ্জন গগৈ।’ নারীটির অভিযোগ, ‘তিনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরেন। সারা শরীর…।’ পরে জোর করে তিনি ঠেলে রঞ্জন গগৈকে সরিয়ে দেন বলে দাবি করেন। পরবর্তীতে এই বিষয়ে কাউকে কিছু না জানাতেও তাকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সেই নারী।অভিযোগে নারীটি এও বলেছেন, ‘এর পরে মাত্র চার সপ্তাহের মধ্যে আমাকে সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন বিভাগে অন্তত তিনবার ট্রান্সফার করা হয়। শুধু তাই নয়, দিল্লি পুলিশের কাজ করা আমার স্বামী ও দেবরও এরপর তাদের চাকরি হারাতে হয়।’ পরে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে যদিও সংশয় প্রকাশ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল সঞ্জীব সুধাকর কলগাঁওকর। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, এই অভিযোগটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বানানো। সেই নারী আরও অন্তত ৫ থেকে ৬ জনের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে কিছু কাজের ব্যাপারে গেলেও তার সঙ্গে রঞ্জন গগৈর কখনো কথা হয়নি।’
Facebook Comments