চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে হংকংয়ে। নির্বাচনের মাধ্যমে চীনকে কড়া জবাব দিতে চাইছেন গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীরা। রবিবার সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। তবে, ভোটাররা আশঙ্কা করছেন, সহিংসতায় ভোট দেওয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হলে ভোটকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না করতে আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীরা। এখন পর্যন্ত কোনো বাধার খবর পাওয়া যায়নি। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ও রাস্তায় পুলিশ পাহারা দিতে দেখা গেছে। ৭৪ লাখ জনসংখ্যা বিশিষ্ট হংকংয়ে ৪১ লাখ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, যা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৩১ লাখ মানুষ ভোট দিতে নিবন্ধন করেছিলেন।
গণতন্ত্রপন্থিরা প্রত্যাশা করছেন কাউন্সিলে তাদের সংখ্যা বাড়বে। যা পরবর্তীকালে অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। বেইজিংপন্থি প্রার্থীরা ভোটারদের আহ্বান জানাচ্ছেন তাদের ভোট দিয়ে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে সৃষ্ট বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় ভোটকেন্দ্রগুলো খুলেছে। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যেই এক লাখ মানুষ ভোট দেওয়া শেষ করেছেন, যা মোট ভোটারের ২৪.৩৭%।
ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ৪৫২টি পদের জন্য এক হাজারেরও বেশি প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। রুরাল ডিস্ট্রিক্টগুলোর জন্য বরাদ্দ রয়েছে আরও ২৭টি পদ। বর্তমানে, বেশিরভাগ পদই বেইজিংপন্থিদের দখলে।প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম বলেছেন, অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সময়ে দাঁড়িয়ে আমি আনন্দের সঙ্গে বলতে চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। প্রধান নির্বাহী নির্বাচনের জন্য যে কমিটি গঠন করা হবে, তাতে ১১৭ জন কাউন্সিলর থাকবেন। তাই, সত্যিকার অর্থে কাউন্সিলররা কম ক্ষমতাধর হলেও এ নির্বাচনের ফলাফলে বোঝা যাবে জনগণ বর্তমান সরকারকে কতটা সমর্থন করছে। অঞ্চলটির প্রথম নারী প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের জন্য এক ধরনের পরীক্ষা হিসেবেই দেখা হচ্ছে এটিকে।
চলতি বছরের জুন মাসে চীন প্রস্তাবিত একটি অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলে দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় চীনের অধীন আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ে। অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী, চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে হংকংয়ে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে, তাকে ফেরত দিতে হবে। গত ২৩ অক্টোবর বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় হংকং আইনসভা। কিন্তু এর আগেই বিক্ষোভটি রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।
Facebook Comments