সারাদিন কাজের পর বিছানা নেওয়া মানে তা এক প্রকার স্বর্গসুখ। ঠিক সেই সময় যদি শয্যা সঙ্গী অদ্ভুত সুরে নাক ডাকতে থাকে তখন তা হয়ে ওঠে বিরক্তকর। ঘুমের বারোটা তো বাজেই পাশাপাশি সম্পর্ক গুলো হয়ে ওঠে তিক্ততার। এমনও অনেকে আছেন যারা এই অদ্ভুত বিচিত্র শব্দের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন না। ফলে শয্যা স্থানও পাল্টে যায়। কেউ কেউ আবার মানিয়ে নিয়ে কাটিয়ে দেন। কিন্তু জানতে হবে ঘুমের মধ্যে মানুষ কেন নাক ডাকে? আমাদের সঙ্গে রয়েছেন পিয়ারলেস হসপিটালের ডাক্তার স্বনয় মণ্ডল। যিনি জানাবেন নাক ডাকার কারণ ও তার প্রতিকারঃ –
ঘুমনোর সময় মানুষ অচৈতন্য হয়ে যায়। ফলে নিজের নাক ডাকার শব্দ নিজে পায় না। কিন্তু পাশের সঙ্গী তার সাক্ষী থাকে। আমাদের গলার মধ্যে কিছু সফট টিস্যু থাকে এবং কিছু পেশী থাকে। ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার সময় গলার ওই পেশী সঙ্কচন-প্রসারন হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের শব্দ তৈরি হয় নাক ও মুখ দিয়ে। এটি কোন রোগ নয়। কিন্তু যদি নিজের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তখন ই এন টি র সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া যেতে পারে। কারণ ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণে না হলে শারীরিক ও মানসিক অসুবিধা তৈরি হতে পার।
যারা ধূমপান, মদ্যপান করেন ও যারা ওবিসিটি তে ভুগছেন তাঁদের মধ্যে নাক ডাকার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কারণ, যারা ধূমপান করেন তাঁদের এমনিতেই শ্বাস জনিত কিছু জটিলতা তৈরি হয়। ধূমপান থেকে টারবাইনেটস নামে নাকের বিশেষ এক ধরনের টিস্যু স্ফীত হয়ে যায়। ফলে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার সময় জটিলতা সৃষ্টি হয়। ধূমপানের পাশাপাশি যারা মদ্যপান করেন, তাঁদেরও জিভের পেশী শিথিল হয়ে যায় ঘুমের সময়। ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের নালি সংকুচিত হয়ে পড়ে ও নাকডাকা শুরু হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত মোটা হয়ে গেলেও নাক ডাকার প্রবণতা বেড়ে যায়।
প্রতিকার স্বরূপ বলা যেতে পারে- যিনি নাক ডাকছেন তাঁর শোয়ার প্যাটার্ন পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ চিত হয়ে না শুয়ে যদি পাশ ফিরে ঘুমনো যায় সেক্ষেত্রে নাক ডাকার প্রবণতা অনেক কমে যায়। ধূমপান মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ওজন কমাতে হবে। অবশ্য যারা অতিরিক্ত নাক ডাকেন এবং বয়স্ক তাঁদের সাধারণত এয়ার পিউরিফাইং মাস্ক বা ডিভাইস দেওয়া হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন রকম ন্যাসাল প্যাড ব্যবহার না করাই ভালো।
Interview- Dr. Swanay Mondal
Photo- Sleepwell Clinic
Facebook Comments