রামায়ণ কিংবা মহাভারত শুধু মহাকাব্য নয়, কূটনীতির অন্যতম উদাহরণ আর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং হনুমান বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কূটনীতিবিদ বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) পুনেতে নিজের ইংরেজি বই “দ্য ইন্ডিয়া ওয়ে: স্ট্র্যাটেজিস ফর অ্যান আনসার্টেন ওয়ার্ল্ড” এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এস. জয়শঙ্করের লেখা বইটি “ভারত মার্গ” নামে মারাঠি অনুবাদেও প্রকাশিত হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কূটনীতি যে প্রধান অস্ত্র এবং অবশ্যম্ভাবী বিশ্বে ভারতের কৌশল কী, সেসব বিষয় নিয়ে বইটিতে আলোচনা করেছেন এস. জয়শঙ্কর। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং হনুমান বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কূটনীতিক। যদি আমরা হনুমানের দিকে তাকাই, তিনি কূটনীতির ঊর্ধ্বে চলে গিয়েছিলেন, তার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান, সীতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং লঙ্কায় আগুন ধরিয়ে দেন।”
এস. জয়শঙ্কর আরও বলেন, “অপরদিকে, শ্রীকৃষ্ণের কূটনীতিবিদের উদাহরণ হিসেবে শিশুপালের শত দোষ খণ্ডন এবং ১০১ দোষ করতেই তাকে হত্যা করা থেকে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিভিন্ন মুহূর্ত তুলে ধরেন।”
দেশ পরিচালনার জন্য এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পদক্ষেপের ব্যাপারে কূটনীতি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন এস. জয়শঙ্কর। তার মতে, পাকিস্তানের পাশাপাশি বর্তমানে চীন ভারতের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই প্রতিবেশী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক গণ্ডি দেখার প্রয়োজন নেই।
এই প্রসঙ্গে মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণের কূটনীতির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “পাণ্ডবেরা আত্মীয়দের বেছে নেয়নি, আমরাও প্রতিবেশীদের বেছে নেব না। স্বাভাবিকভাবেই, প্রতিবেশী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভালো বুদ্ধি বিরাজ করবে বলেই আমরা আশা করছি।” সবমিলে এস. জয়শঙ্কর যে মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতের অন্যতম দুই কূটনীতিবিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলার চেষ্টা করেন, বইয়ের প্রকাশ অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে সেটি স্পষ্ট হয়েছে।
Facebook Comments