পরপর দুটি ঘটনায় এই প্রশ্নই সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম ঘটনা মহারাষ্ট্রের নাসিকের, দ্বিতীয়টি বাংলার শিলিগুড়ির। দেখা গেল, করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরই দুইজনের শরীরে তৈরি হল চুম্বক ক্ষেত্র। লোহা, স্টিলের জিনিসপত্র সবই আটকে যাচ্ছে শরীরে! শিলিগুড়ির ফুলেশ্বরীতে ‘ম্যাগনেট ম্যান’কে দেখতে ভিড়। তবে কি ভ্যাকসিনের প্রভাবে শরীরে অন্য কোনও সমস্যা বাসা বাঁধল? এই সংশয়ও এড়ানো যাচ্ছে না। তাই কোনও শারীরিক অসুস্থতা না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে মানব শরীর চুম্বকে বদলে গেল, তা বুঝতে তাকে ভরতি করা হয়েছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে।
নেপাল চক্রবর্তী, বয়স ৫৮ বছর। শিলিগুড়ির ফুলেশ্বরীর বাড়িতে একাই থাকেন। স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে আগেই। গত ৭ তারিখ করোনার টিকা নেন নেপালবাবু। সব ঠিকই ছিল, কোনও সমস্যাও হয়নি। দিন কয়েক পর খবরে তিনি দেখেন যে করোনা টিকা নিয়ে মহারাষ্ট্রের এক প্রৌঢ়ের শরীরে চৌম্বকীয় শক্তি তৈরি হয়েছে। ধর্ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ধাতব বস্তুকে তা আকর্ষণ করছে। দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের শরীরে দিব্যি আটকে রয়েছে হাতা, খুন্তি, চামচ, পয়সা। নেপালবাবুর বয়ান অনুযায়ী, ওই খবরটি দেখার পর তার নিজেকে পরীক্ষা করে দেখার ইচ্ছা হয়। তার শরীরেও এরকম চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে কিনা, তা বুঝতে পয়সা আটকে দেখেন। পয়সাটি পড়ে যায়নি। তারপর একে একে আরও বিভিন্ন ধাতব বস্তু নিয়ে পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, সেসবই আটকে তার শরীরে। ১১ তারিখ থেকে এমনই চলছে।
খবরটি প্রকাশ্যে আসে রবিবার। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর শরীরে নানা প্রভাবের মধ্যে এমন ‘অলৌকিক’ কাণ্ডও ঘটতে পারে, তার নমুনা পেয়ে ফুলেশ্বরীবাসী রীতিমতো তাজ্জব। বিশ্বাসই হচ্ছে না যেন! নেপালবাবুর অবশ্য দাবি, তার শরীরে এভাবেই চুম্বকে বদলে গিয়েছে। তাতে আলাদা কোনও শারীরিক সমস্যাই নেই, দিব্যি সুস্থ তিনি। তা সত্ত্বেও তাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১০ নাসিকে এক প্রৌঢ়র শরীরেও ঠিক একইরকমভাবে চৌম্বক শক্তি তৈরি হয়েছিল করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর। গোড়ার দিকে বাড়ির লোকের কাছেই এই ঘটনা অবিশ্বাস্য ঠেকছিল। তারা মনে করেছিলেন, হয়তো ঘর্মাক্ত শরীরে আটকে যাচ্ছে থালা-চামচগুলি। কিন্তু দেখা যায়, ওই ব্যক্তি স্নান করার পর শুকনো শরীরেও একই ম্যাজিক! এবার সেই ম্যাজিকই শিলিগুড়িতে। বিজ্ঞান এখনও এর কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। আর সে কারণেই নেপালবাবুর শারীরিক পরীক্ষা চলছে।
ছবিঃ সংগৃহিত
Facebook Comments