চীনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনমন ঘটছে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের সুরক্ষাস্বরুপ চীনের সঙ্গে করা মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বাতিলের কথা ভাবছে দেশটি। প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের শাসনামলে চীনের সঙ্গে মালদ্বীপ এই চুক্তি করেছিল। ইকোনোমিকস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ইঙ্গিত দিয়েছেন মালদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ফায়াজ ইসমাইল।
আবদুল্লাহ ইয়ামিনের শাসনামলে তার সরকার ২০১৭ সালে চীনের সঙ্গে এই মুক্তবাণিজ্য চুক্তির অনুমোদন দেয়। ওই বছর মালদ্বীপ সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং আবদুল্লাহ ইয়ামিন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সম্প্রতি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বেতারে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে মালদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ফায়াজ ইসমাইল বলেন, প্রথম অবস্থানে রেখে এই চুক্তি স্বাক্ষর করা উচিত হয়নি এবং দেশের অর্থনীতির জন্য চুক্তিটি ক্ষতিকর।
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় সংসদ সদস্য হিসেবে চুক্তিটির তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন জানিয়ে ফায়াজ বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, এই মুক্তবাণিজ্য চুক্তি অগ্রহণযোগ্য এবং এটা সই করা উচিত হয়নি মালদ্বীপের।’
তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই মুক্তবাণিজ্য চুক্তি কোনও শুল্ক ছাড়াই চীন থেকে পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়। তবে অন্য দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর বড় রকমের শুল্ক আদায় করা হলেও চীনা পণ্যের ওপর কোনও শুল্ক নেয়া না নেয়ার কারণে অন্যান্য দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বিঘ্নিত হতে পারে।’
ফায়াজের কথায়, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে যে বাণিজ্য সম্পর্কগুলো প্রতিষ্ঠা করেছি তা নষ্ট হয়ে যাবে যদি আমরা এই চুক্তি নিয়ে এগিয়ে যাই। সিঙ্গাপুর, দুবাই এবং ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্কগুলো বৃথা যাবে। অবশ্য, কম খরচে পণ্য পাওয়া গেলে সব ব্যবসায়ী চীনা পণ্যই বেছে নেবে।’
মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আমির এই চুক্তিকে ‘অস্তিত্বহীন’ বলে অভিহিত করেছেন।এ ছাড়া মালদ্বীপের রফতানির একটি বড় অংশে রয়েছেন মৎস্যজীবী। তবে জেলেরা এই মুক্তবাণিজ্য চুক্তি থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে মালদ্বীপ সরকার। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মাদ সোলিহ তার প্রতিপক্ষ আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমকে গত নির্বাচনে পরাজিত করেন। ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম চীনপন্থী বলে পরিচিত।
Facebook Comments