বঙ্গ রাজনীতিতে নক্ষত্র পতন। চলে গেলেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২২ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ আগেই এসএসকেএমে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
গত মাসের শেষের দিকে শরীর খারাপ হয় তাঁর। চেক আপ করাতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট বাড়ায় তখনই এসএসকেএম-এর উডবার্ন ওয়ার্ডের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিত্সকরা দ্রুত চিকিত্সা শুরু করেন। কিন্তু তাঁদের সমস্ত প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে চলে যান বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা।
দীর্ঘ ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে একাধিক সাফল্য কুড়িয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। ছাত্রাবস্থায় ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন তিনি। মাত্র ২৬ বছর বয়সে ১৯৭২ সালে সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হন।
এরপর ২০০০ সালে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দিয়েই কলকাতা পুরসভার মেয়র হন তিনি। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মেয়রের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কিন্তু এরপরই তৃণমূলের সাথে তাঁর দূরত্ব তৈরি হওয়ায় নিজের আলাদা দল তৈরি করে কংগ্রেসের সাথে জোটে করে পুরভোটে লড়েন। এরপর ফের কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। কিন্তু ২০১০ সালে কংগ্রেসের সাথে আবার মনোমালিন্য হয় তাঁর। ফলে আবার তৃণমূলে ফেরেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিনবারের মন্ত্রিসভায় তিনবারই সদস্য ছিলেন তিনি।
তবে সাফল্যের পাশাপাশি বিতর্কও সঙ্গী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে আসা নারদ স্টিং কান্ডে নাম জড়ায় তাঁর। ক্যামেরার সামনে ঘুষ নিতে দেখা যায় তাঁকে। চলতি বছরের ১৭ মে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। বেশ কয়েকদিন পর জামিন পান তিনি।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনৈতিক মহলে। আগামীকাল সকালে রবীন্দ্র সদনে শায়িত থাকবে মন্ত্রীর মরদেহ। দুপুর ২টায় তাঁর কেন্দ্র বালিগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। এরপর বাড়ি, একডালিয়া এভারগ্রীন ক্লাব হয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে যাবে তাঁর দেহ।
Facebook Comments