ইউক্রেনে এখনো আটকে আছেন প্রায় ১৬ হাজার ভারতীয়। যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী। এবার তাদের দেশে ফেরাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।সরকারি সূত্র বলছে, চার মন্ত্রী- জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, হরদীপ পুরি, কিরণ রিজুজু এবং ভি কে সিং ইউক্রেনের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে যাবেন। সেখান থেকে তারা ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করার কাজ দেখভাল করবেন। মোদী সরকারের এই চার মন্ত্রী ভারতের বিশেষ দূত হয়ে ওই দেশগুলোতে যাবেন। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। মূলত সেখানে তিনি সিদ্ধান্তটি নেন।
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় এখনই ভূখণ্ডটি থেকে ভারতীয় নাগরিকদের সরাসরি নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। লড়াইয়ের কারণে ইউক্রেনের বিমানবন্দরগুলোতে কোনো বিমান নামতে পারছে না। উত্তেজনাকর এমন অবস্থাতে ইউক্রেন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে ভারতীয়দের রোমানিয়ায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আর সেখান থেকেই বিমানে করে ২৪৯ জন ভারতীয়কে দিল্লিতে উড়িয়ে আনা হয়।
এ নিয়ে মোট পাঁচটি বিমানে চেপে ভারতীয়রা নিজ দেশে ফিরলেন। দিল্লিতে নামার পর এক শিক্ষার্থী ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, আসল সমস্যা হলো সীমান্ত পেরনো। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাস আমাদের সব ধরনের সাহায্য করছে। আশা করছি, আটক বাকি ভারতীয়রা নিরাপদে দেশে ফিরতে পারবেন।
দূতাবাসের সতর্কবার্তা
ইউক্রেনে অবস্থিত ভারতের দূতাবাসের পক্ষ থেকে এরই মধ্যেই সতর্ক করে জানানো হয়, কোনো ভারতীয় যেন নিজে থেকে ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পেরতে না যান। কেননা বিভিন্ন সীমান্ত চেকপোস্টের অবস্থা খুবই স্পর্শকাতর। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। মূলত এরপরই ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে।
দূতাবাস কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তায় বলা হয়, চেকপোস্ট অতিক্রম করানোটা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই সকলের সঙ্গে সমন্বয় না করে কোনো ভারতীয় যেন সীমান্ত অতিক্রম করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা না করেন।
অপারেশন গঙ্গা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউক্রেন থেকে নিজেদের নাগরিকদের ফেরানোর অভিযানের নাম দিয়েছে অপারেশন গঙ্গা। এর জন্য একটা নির্দিষ্ট টুইটার হ্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া ও স্লোভাক রিপাবলিকে হেলপলাইন নম্বর সেখানে দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে এই রাষ্ট্রগুলোর সীমান্ত রয়েছে।
ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা সামাজিক মাধ্যমে জানাচ্ছেন, তারা কীভাবে সাবওয়েত, বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন। কীভাবে শহরে ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে এবং গোলাগুলি চলছে। তারা বারবার সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থী সীমান্ত অতিক্রম করতে গিয়েছিলেন। বর্তমানে তারা বিপাকে পড়েছেন এবং তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
Facebook Comments