বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় নতুন তথ্য সামনে এসেছে। কলকাতা পুলিশ বলছে, সাংসদকে হত্যার পর তার শরীর থেকে চামড়া তুলে, মাংস বের করে টুকরো টুকরো করা হয়। এসব টুকরো ব্যাগে ভরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়।
এই ক্ষেত্রে, কলকাতার নিউ টাউন এলাকায় অবস্থিত একটি অ্যাপার্টমেন্ট ফ্ল্যাটের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজও সামনে এসেছে। এতে দুই অভিযুক্তকে প্লাস্টিকের ব্যাগ ও স্যুটকেস নিয়ে যেতে দেখা যায়। একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই একই ফ্ল্যাটে এমপি আনোয়ারুলকে শেষ দেখা গিয়েছিল। 22 মে পুলিশ তদন্তের জন্য এই ফ্ল্যাটে পৌঁছেছিল। এখানে রক্তের দাগও পাওয়া গেছে।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন আনোয়ারুল। পরদিনই নিখোঁজ হন তিনি। এখন হানিট্রাপে কোণ থেকেও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহ, আনোয়ারুল হত্যার সঙ্গে একজন নারীও জড়িত, যিনি বাংলাদেশের সাংসদকে হানিট্রাপে ফেলে কলকাতায় ডেকেছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ ওই নারীকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে ফ্ল্যাটের বাইরে থেকে অনেক সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটিতে বাংলাদেশি নারীর সঙ্গে দেখা যায় আনোয়ারুলকে। ওই নারীর নাম শিলাস্তি রহমান। পুলিশের ধারণা, অভিযুক্তদের সঙ্গে নিয়ে তিনি আনোয়ারুলকে ফাঁদে ফেলে কলকাতায় আসতে বলেন। একটি ভিডিওতে আনোয়ারুল ও শিলাস্তিকে একসঙ্গে ফ্ল্যাটে যেতে দেখা যাচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, “আমাদের বিশ্বাস আনোয়ারুলকে শিলাস্তির সঙ্গে ফ্ল্যাটে যাওয়ার পরই খুন করা হয়েছে। বাংলাদেশি পুলিশ শিলাস্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
🟠কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশও বিষয়টি তদন্ত করছে। সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার সঙ্গে কতজন জড়িত তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে এ পর্যন্ত ৪ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা পুলিশ। একই সময়ে, এক অভিযুক্ত জিহাদ হাবিলদারকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।
🟠শুক্রবার (২৪ মে) সকালে এই মামলায় এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। তার নাম জিহাদ হাওলদার। শুক্রবার (২৪ মে) বেলা ১১টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করে ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। তবে আদালত তাকে ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিহাদ পেশায় একজন কসাই। তিনি পুলিশকে জানান, ফ্ল্যাটে চারজন আনোয়ারুলকে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে। তবে এ মামলায় কোনো নারী জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেননি জিহাদ।
🟠 জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ হাবিলদার জানান, মাত্র ২ মাস আগে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এমপি আনোয়ারুলের লাশ টুকরো টুকরো করার জন্য আখতারুজ্জামান তাকে ভাড়া করেছিলেন। হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য মাত্র ২ মাস আগে আমাকে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় ডাকা হয়।
🟠পাঁচ কোটি টাকার সুপারি বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বাংলাদেশি এমপিকে খুন করেছে তার আমেরিকান বন্ধু আখতারুজ্জামান। এজন্য পাঁচ কোটি টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছে। আখতারুজ্জামানেরও কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
https://x.com/ndtv/status/1793939274645049704?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1793930920711659625%7Ctwgr%5E9021e3900f625e006c92bb974cb32cecae91d7ef%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fm.dailyhunt.in%2Fnews%2Findia%2Fbangla%2Fforyou%3Fmode%3Dpwa
পুলিশ আখতারুজ্জামানের অবস্থান জানতে না পারলেও বর্তমানে তিনি আমেরিকায় রয়েছেন বলে তাদের ধারণা। পুলিশ জানিয়েছে, আখতারুজ্জামান ও শিলাস্তি একে অপরকে আগে থেকেই চিনত এবং তারা এমপি হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হতে পারে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনোয়ারুল তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে কলকাতায় তার বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন। পরদিন দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে সেখান থেকে চলে যান তিনি।
সন্ধ্যায় ফিরবেন বলে জানান। বিধান পার্কে ক্যালকাটা পাবলিক স্কুলের উল্টোদিকে থেকে ট্যাক্সি নিয়েছিলেন আনোয়ারুল। সন্ধ্যায় তিনি গোপালকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছিলেন যে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। এ কারণে তার অবস্থান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আনোয়ারুল আজিম আনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। তিনি 2014, 2018 এবং 2024 সালে ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে নির্বাচনে জয়ী হন। আনোয়ারুলের মৃত্যুর আগে তার পরিবারের সদস্যরা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সাহায্য চেয়েছিলেন।
Facebook Comments