ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার কাছ ভারতের জ্বালানি তেল কেনা নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই প্রকাশ্যে এল এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। মঙ্গলবার ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারত এক মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে যতটা জ্বালানি তেল কেনে, মাত্র এক দিনেই সেই পরিমাণ তেল ক্রয় করে ইউরোপ।
বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি তেল কেনা নিয়ে বিতর্ক চলছে। সেই প্রেক্ষিতে ইউরোপের দিকে তাকানো উচিত। এটা ঠিক, আমাদের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমরা বাইরে থেকে কিনে থাকে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো উচিত। ভারত এক মাসে রাশিয়া থেকে যে পরিমাণ জ্বালানি কেনে, এক দিনেই সেই পরিমাণ কিনে নেয় ইউরোপ’।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা সংঘাতের বিরুদ্ধে। হিংসা বন্ধের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে যে কোনো কূটনৈতিক আলোচনায় আমরা প্রস্তুত। এর আগেও আমরা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি’।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি আমদানি মোট আমদানির প্রায় ১-২ শতাংশ। একই সঙ্গে ওয়াশিংটন বলেছে, মস্কোর উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ‘আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি একটি দেশের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’।
এ বার দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আবারও জোরের সঙ্গে বলেন, ‘ইউক্রেনের ঘটনা চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা একান্ত ভাবে তাদেরই ব্যাপার। আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এক সময়ে যে পর্যায়ে পৌঁছেছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। তবে এখন আমরা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী’।
ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই রাশিয়ার উপর ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। তার পরেও মস্কো থেকে ভারতের জ্বালানি তেল আমদানি নিয়ে প্রবল বিতর্ক এখনও অব্যাহত। এ প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, এটা আসলে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর কৌশল।
বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘এই ইস্যুটা এখন বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। যেন উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার চলছে। অথচ, আজ একটা প্রতিবেদনে পড়লাম, গত মার্চ মাসে রাশিয়া থেকে ১৫ শতাংশের বেশি জ্বালানি তেল এবং গ্যাস কিনেছে ইউরোপ’।
Facebook Comments