বিজেপির রাজ্য সংগঠন থেকে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের কেউ নেই। বিজেপিতে তাহলে তাদের গুরুত্ব কোথায়? কি করতে পারলেন তাদের নির্বাচন করা প্রতিনিধি শান্তনু ঠাকুর ? নিজেই মন্ত্রী হলেন। যা পেলেন তিনি পেলেন। এমন সব প্রশ্নের মুখোমুখি শান্তনু ঠাকুরের কাছে মন্ত্রীত্বই এখন কাঁটা।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির কমিটি তৈরির পর শান্তনু ঠাকুরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে মতুয়া সংগঠনের তরফে। মতুয়া সহ উদ্বাস্তু ভোটার এবং নাগরিক মহলের দাবি পশ্চিমবঙ্গের অতীতের শাসক কংগ্রেস, বাম এবং বর্তমানের তৃণমূল কিছুই করেনি। তেমনি কেন্দ্রের শাসক কংগ্রেস ও বিজেপি তাদের দাবি মেটায়নি।
মতুয়াদের দাবী ছিল নাগরিকত্বের সম্মান। সেখানে তাদের দেওয়া হয়েছে মতুয়া সংগঠনের নামে শিক্ষালয় থেকে ভাতা বাড়ি ইত্যাদি । মতুয়া এবং উদ্বাস্তুদের দাবী, সম্মান নিয়ে নাগরিকত্ব চাই। তবেই তো রাষ্ট্রের সুবিধা পাবো। পদে পদে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বাংলাদেশি সন্দেহের। উদ্বাস্তুদের পরিবারের সন্তানরা পড়াশোনা শেখার পর চাকরি পরীক্ষায় পাশ করলেও চাকরি পেতে নাগরিকত্বের তদন্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেকে চাকরি পেয়েও করতে পারছেননা। এই যন্ত্রণার মুক্তি চান মতুয়া এবং উদ্বাস্তুরা।
উদ্বাস্তুদের পিছনের রয়েছে প্রভাবশালী হিন্দুরাও। ফলে চাপের ওজন বেশ বেশি শান্তনু ঠাকুরের ওপর। এই পরিস্থিতিতে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সাথে বৈঠক করেন। জেপি নাড্ডা সাত দিন সময় চেয়ে নেন। সূত্রের খবর, শান্তনু ঠাকুর চেয়েছিলেন বিজেপির কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের দু এক জন ঢুকলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় আরও বিপাকে পড়েন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী।
বিজেপি সূত্রের খবর, শান্তনু ঠাকুর চেয়েছিলেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ডাঃ মনস্পতি দেবের অপসারণ এবং তার ঘনিষ্ঠকে সভাপতি করতে। বিজেপি শান্তনু ঠাকুরের দাবী অর্ধেক মেনে সভাপতি পরিবর্তন করলেও তার ঘনিষ্ঠকে করেনি। বিজেপির দাবী, বিজেপি ব্যক্তির মতামতকে প্রাধান্য দিলেও ব্যক্তি কেন্দ্রীক দল নয়, ফলে শান্তনু ঠাকুরের দাবী পুরো মানা সম্ভব নয়। বিজেপি এটা করেও না।
এমন পরিস্থিতিতে শান্তনু ঠাকুর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঠাকুর বাড়িতে মতুয়া বিধায়কদের বৈঠক ডেকেছেন। বিজেপির দাবী, শান্তনু ঠাকুরের সব দাবী মানা সম্ভব নয়। আর শান্তনু ঠাকুর সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, রাজ্য বিজেপিতে তার প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করছেন না । এখন দেখার পিছু কে হটে?
বিজেপির দাবী, শান্তনু ঠাকুরের পক্ষে পিছু হটে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলে কতটা লাভ তা তিনি ভালোই জানেন। কারণ সেখানে আছে মমতা বালা ঠাকুর। এমনকি উদ্বাস্তুরাও ভালোভাবে নেবে না। উদ্বাস্তুদের দাবীর বিরুদ্ধে তৃণমূল কাজ করছে। ফলে শান্তনু ঠাকুর হয়ত মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।
বিজেপি সূত্রের আরও দাবী, শান্তনু ঠাকুরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিজেপিকে নয়।
Facebook Comments