শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার জেরে দেশে আরোপিত কারফিউ অবস্থার সময় বাড়ল সরকার। নতুন এই ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে পরদিন মঙ্গলবার ভোর ৪টে পর্যন্ত দেশজুড়ে বহাল রাখা হবে এই কারফিউ। স্থানীয় গণমাধ্যমে বরাতে করা প্রতিবেদনে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে দেশটিতে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছিল শ্রীলঙ্কান সরকার। ভয়াবহ এই হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের।
পুলিশের মুখপাত্র রওয়ান গানসেকেররা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘পরপর তিনটি গির্জা এবং তিনটি হোটেলসহ মোট আটটি স্থানে চালানো এ হামলায় ঠিক কতজন মারা গেছেন তা এখনই নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কেননা এতে মৃতের সংখ্যাও ক্রমশ লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও ভয়াবহ এ হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এর আগে গত রবিবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকালে দেশটির খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা ইস্টার সানডে উদযাপন করছিলেন। তখন কলম্বো ও এর আশপাশের বিভিন্ন গির্জা এবং হোটেলসহ অন্তত আটটি স্থাপনায় আকস্মিক বোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। মূলত এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৬ বিদেশি নাগরিকসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯০ জন। তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক লোক।
গত এক দশকের মধ্যে দেশটিতে হওয়া এটি সবচেয়ে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা। এ দিন সকাল থেকে একযোগে ৩টি গির্জায় প্রথম দফায় বিস্ফোরণটি ঘটে। তখন কলম্বোর সেন্ট অ্যান্টনি, নেগোম্বোর সেন্ট সেবাস্টিয়ান এবং বাত্তিকালোয়ার জিয়ন চার্চে প্রায় একই সময় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
মূলত এর পরপরই টার্গেট করা হয় শহরের বেশ কিছু অভিজাত হোটেলকে। তখন বিস্ফোরণ হয় সাংরি-লা, সিনামন গ্র্যান্ড, মাউন্ট ল্যাভিনিয়া এবং কিংসবারি হোটেলে। আর শেষ বিস্ফোরণটি হয় কলম্বো লাগোয়া দেমাতাগোড়ার একটি আবাসন এবং চিড়িয়াখানায়।
পরবর্তীতে হামলার নিন্দা জানিয়ে শ্রীলঙ্কান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে বলেছেন, ‘আমার দেশ বর্তমানে এক বিরাট দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীদের পূর্ব পরিকল্পিত নির্মম এ বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত অসংখ্য লোকের মৃত্যু হয়েছে। এতে হতাহত হয়েছেন দেশি-বিদেশি আরও অনেক বেসামরিক।’
Facebook Comments