দাঁতে ব্যথা, কোমর ও পায়ের মাংসপেশীতে টান। তবুও মাঠ ছাড়েননি, লড়াই চালিয়ে গেছেন। এশিয়ান গেমসে পদক জয়ের আশায় শুধুমাত্র মানসিক জোরে নেমে পড়েছিলেন ট্র্যাকে। অ্যাথলেটিক্সের সবচেয়ে কঠিন ইভেন্ট হেপ্টাথলন। ১০০ মিটার হার্ডলস, হাইজাম্প, লং জাম্প, শটপুট, ২০০ মিটার, ৮০০ মিটার ট্র্যাক এবং জ্যাভেলিন থ্রো-এই সাতটা ইভেন্ট নিয়ে হয় হেপ্টাথলন। বাংলার স্বপ্না সবমিলিয়ে অর্জন করলেন সর্বোচ্চ ৬০২৬ পয়েন্ট। পিছনে ফেললেন চিনের ওয়াং কুইংলিং-কে। আর সেখানেই প্রথম ভারতীয় হিসাবে হেপ্টাথলনে স্বর্ণপদক পেলেন জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মন। আর ভারতে এলো এগারো নম্বর সোনা।
চোয়ালে ব্যান্ডেজ নিয়ে স্বপ্না যখন ছুটছেন, টেলিভিশনের সামনে বসে প্রার্থনা করছে পরিবার। প্রার্থনা করছে গোটা দেশ। সোনা জয়ের পর আবেগ আর বাঁধ মানেনি। এই জয় তো শুধু সোনার নয়। শারীরিক যন্ত্রণাকে হারিয়ে স্বপ্না যে জীবনযুদ্ধের অনেক বড় লড়াইও জিতে নিলেন। জয়ের পর স্বপ্নার ছোটবেলার কোচ সুকান্ত সিনহা জানালেন, ‘আট বছর ওকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। খুব গরীব পরিবারের মেয়ে স্বপ্না। বাবা ভ্যান চালক, অসুস্থ। অভাবের সংসারে ট্রেনিংয়ের সব উপকরণ ওর পক্ষে জোগাড় করার সামর্থ ছিল না। ক্লাস ফোরে পড়ার সময় থেকেই ওর মধ্যে একটা আগুন দেখেছিলাম। তারপরই শুরু করি ওর ট্রেনিং। খুব চাপা স্বভাবের ছিল। আর সেটাই হয়তো ওর শক্তি। আজ যে কতটা খুশি লাগছে, তা বলে বোঝাতে পারব না।’
ছবি সৌজন্যেঃ নমস্তে তেলেঙ্গানা
Facebook Comments