প্রায় কুড়ি বছরের পুরানো কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলার রায় হল। ১৯৯৮ সালে শুটিং করতে গিয়ে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার সেই কালো দিন আজও সলমান খানের পিছু ছাড়েনি। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেরাদের মধ্যে সলমানও একজন। সলমান খানের জেলযাত্রা মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে বিশিষ্টজনদের অভিমত ছিল আগেই। যোধপুর আদালতে নিষ্পত্তি হল কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলা। ভারতীয় সংবিধানের ৯ এবং ৫১নং ধারানুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হন সলমান খান এবং বিচারক ৫ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেন। যোধপুর আদালত কৃষ্ণসার হরিণ হত্যায় দোষী সাব্যস্ত করে সলমান খানকে। বিচারক দেবকুমার ক্ষেত্রি অবশ্য টাবু, সোনালি বেন্দ্রে, নীলম ও সইফ আলি খানকে বেকসুর খালাস দেন। জানা গিয়েছে ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের ৯ ও ৫১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সলমন। এছাড়া ১০ হাজার টাকা জরিমানা। এই ঘটনায় কম বেশি সকলেই উদ্বিগ্ন। আবার কারও বক্তব্য এই শাস্তি হওয়া উচিৎ ছিল। একবার জেনে নেওয়া যাক তারকাদের বক্তব্য-
পাভেল– এটা আলাদা করে কোন বিষয় নয়। কেউ ভুল কাজ করেছে তার জন্য শাস্তি পেয়েছে। তিনি যদি তারকা হন তার শাস্তি হবে না এমনটা নয়। এর আগে সঞ্জয় দত্ত এর শাস্তি হয়েছে। আমার যতদূর ধারনা এত তাড়াতাড়ি নিশ্চয় হয়ে যাবেনা। সলমান খান এখানেই থেমে থাকবে না। আমি একটা বিষয়ে খুশি যে এত বছর পরে হলেও এই ধরনের দোষীর শাস্তি হয়েছে। এত বড় একজন মানুষ যদি শাস্তি পায় তা দেখে সাধারন মানুষ বুঝবে আইন সবার জন্য একই। এতে আমি খুশি। দোষী শাস্তি পেয়েছে এই নিয়ে আলাদা করে আমার কিছু বলার নেই। আইনের চোখে সকলেই সমান।
সায়ন্তনি গুহঠাকুরতা – আমার মনে হয় এই শাস্তি অনেক আগেই হওয়া উচিৎ ছিল। ভুল করেছেন শাস্তি পেয়েছেন। তবে আরও মনে হয়, যারা পরিচিত তাদের সমাজের প্রতি অনেক বেশি দায়িত্ব। তারা কি করছেন এটা অনেকটা মাথায় রেখে কাজ করতে হয়। তাই শাস্তি যা হয়েছে তা তার দোষের। এত বছর পর না হয়ে আরও আগে হওয়া উচিৎ ছিল।
আদিত্য– শাস্তি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে ২০টা বছর মানে কম দিন নয়। মানুষ বদলে যায়। এমনকি সেই মানুষটা পৃথিবীতে নাও থাকতে পারে। তাই আইন এত দেরি করে সিদ্ধান্ত নিলে সমস্যা হয়ে যায়।
পলাশ অধিকারী– আমি আসলে নিজে সলমানের ভক্ত। প্রত্যেকটা ঈদ সাল্লু ভাই এর ছবির জন্য অপেক্ষা করতাম। কিন্তু যা ভুল করেছেন তার জন্য শাস্তি হবেই। আমি ভালবাসলেও এটা তো মেনে নিতে হবে অনেক অপরাধই তো উনি করেছেন। শাস্তি পেতেই হত। সমাজের প্রতি প্রত্যেকের কিছু না কিছু দায়িত্ব থাকেই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়, আইন যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা ঠিকই।
সুমনা দাস– ভুল তা ভুলই হয়। আইন সবার জন্য এক। শেষ পর্যন্ত আমরা সকলেই মানুষ। আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ সমাজের প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্যকে মনে রাখা। আমরা সমাজের প্রতি যে ভুল করছি তা সমাজ আমাদের ফিরিয়ে দেবে। প্রকৃতির বিপরীতে গিয়ে কিছুই করা সম্ভব নয়। আর এই ভাবে যদি চালাতে থাকি, আমরা পারবো তো প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করতে? তাই আমার মনে হয় একজন মানুষ হিসেবে উনি শাস্তি পেয়েছেন।
জিয়ারত শেখ – সলমান খান বলে নয় এই ঘটনার শাস্তি আমার ঠিক লাগেনি। তবে আইন আইনের মতো চলবে। যে সময়কার এটা ঘটনা, সেই সময় শিকার করা এখনকার মতো এত বেশি নিয়মের বেড়া জালে আসেনি। যত আগের ঘটনা তাতে সলমান খান নিজেও অনেক ওঠাপড়া দেখেছেন। এতবছর পর শাস্তি!
ছবি সৌজন্যে : ফেসবুক অফিসিয়াল পেজ
Facebook Comments