চীনের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলবর্তী অঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘লেকিমা’র আঘাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৮ জন। এতে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন আরও কমপক্ষে ১৪ জন। তাছাড়া এবারের ঝড়ে অন্তত ১০ লক্ষাধিক লোক গৃহহীন হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। শনিবার (১০ আগস্ট) স্থানীয় সময় মধ্য রাতে দেশটির তাইওয়ান ও এর বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ের মধ্যবর্তী ওয়েনলিং শহরে আঘাত হানে টাইফুন ‘লেকিমা’। যদিও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় এরই মধ্যে উপকূলবর্তী অঞ্চলটিতে ‘রেড অ্যালার্ট’ অর্থাৎ সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছিল চীনা কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের মতে, প্রথমে ‘লেকিমা’ নামে ঝড়টিকে এটিকে সুপার টাইফুন বলে ধারণা করা হলেও স্থলভাগে আঘাত হানার কিছুক্ষণের মধ্যে তা নিজের শক্তি হারিয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। উপকূলে আঘাত হানার সময় ঝড়টির গড় গতিবেগ ছিল প্রায় ১৮৭ কিলোমিটার।
চীনা রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‘জিনহুয়া’ জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় ওয়েনজু শহরের একটি বাঁধ ভেঙে মারাত্মক ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে নিজের শক্তি কমিয়ে জেজিয়াং প্রদেশের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এরপর প্রায় ২০ লাখ অধিবাসীর শহর সাংহাইয়ের দিকে ঝড়টি অগ্রসর হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তবে বাতাসের গতিবেগ বর্তমানে কিছুটা কম থাকায় প্রদেশটিতে তেমন কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হবে না বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, জরুরি উদ্ধার কর্মীরা বন্যা ও ভূমিধ্বসে আটকে পড়া গাড়ি চালকদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন। কেননা ব্যাপক ঝড়ে সড়কের পাশে থাকা গাছপালা ও বিদ্যুতের তার পড়ে পথঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।
তাছাড়া কর্তৃপক্ষ অন্তত এক হাজারের বেশি ফ্লাইট ও ট্রেন সার্ভিস অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রেখেছেন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় এরই মধ্যে ওয়েনলিং শহরে বসবাসরত প্রায় আড়াই লাখ ও জেজিয়াংয়েল ৮ লক্ষাধিক মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
‘জিনহুয়া’র খবরে বলা হয়, চলতি বছর দেশটিতে নবমবারের মতো আঘাত হানল এমন শক্তিশালী টাইফুন। এবারের ঝরের তাণ্ডবে যেসব বৈদ্যুতিক লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; তাতে প্রায় ২৭ লাখের মতো বাড়িঘরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ জরুরিভিত্তিতে সেই সমস্যাগুলোকে নিরসনের পথ খুঁজছেন।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments