ওড়িশার বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন ৮২টি বেওয়ারিশ মৃতদেহ তাদের প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষা করছে। ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ এখনও ৮২টি মৃতদেহ শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহ শনাক্ত করতে স্বজনদের ডিএনএ করা হচ্ছে। তবে রিপোর্ট আসতে অনেক সময় লাগছে যার কারণে অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন।
অধিকাংশ মৃতদেহই ডিকম্পোজড। তার শনাক্তকরণের জন্য এখন শুধু ডিএনএ পরীক্ষা রিপোর্টের সাপোর্ট আছে।
একইভাবে, AIIMS প্রশাসন বলছে যে ১৬২টি মৃতদেহের মধ্যে ৮০টি শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ৮২টি মৃতদেহ এখনও সনাক্ত করা যায়নি। একইসঙ্গে ৩০টির বেশি মৃতদেহ এমন যে, কোনো দাবিদার নেই। দু-একজন মৃতদেহর দাবিদার বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে ডিএনএ পরীক্ষা রিপোর্ট ছাড়া মৃতদেহ হস্তান্তর করা ভুল হবে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে নয়াদিল্লিতে পাঠানো নমুনার রিপোর্ট দু-এক দিনের মধ্যে আসবে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান শুক্রবার AIIMS আধিকারিকদের সাথে দেখা করেছেন এবং স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। একই সঙ্গে এখন পর্যন্ত শনাক্ত না হওয়া মৃতদেহগুলোর শেষকৃত্যের বিষয়টিও সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতদেহগুলো হিমঘরে রাখা হয়েছে। এই প্রচণ্ড গরমে প্রিয়জনকে শেষবারের মতো দেখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অন্য রাজ্য থেকে আসা আত্মীয়দের।
কয়েকজন স্বজন জানান, বডি পেয়েছেন। এতে অনেক ঝামেলা হচ্ছে। ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত মানুষ তাদের স্বজনের মৃতদেহর জন্য সংগ্রাম করছে।
📌 প্রসঙ্গত উল্লেখ্যঃ শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ওড়িশার বালেশ্বর জেলার বাহানাগা বাজার এলাকায় ঘটে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা। কলকাতার শালিমার থেকে চেন্নাইগামী সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস, বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ও একটি মালবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভুলবশত বালাসোরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের লুপ লাইনে (বাড়তি লাইনে) প্রবেশ করে এবং লুপ লাইনের ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনে আঘাত হানে। ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৮৮। একই সময়ে আহত হয়েছেন ১,১৭৫ জন জন। ওড়িশার বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনা গোটা বিশ্বকে স্তম্ভিত করেছে।
সূত্রঃ রিপাবলিক
Facebook Comments