সন্ত্রাস ক্রমেই বেড়ে চলেছে। জঙ্গি হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পরিযায়ী শ্রমিক। অত্যাচারিত হচ্ছেন কাশ্মীরি পন্ডিতরাও। সম্প্রতি জঙ্গিদের গুলিতে উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই কাশ্মীরি পন্ডিত। এই অবস্থায় তাঁদের সুরক্ষা প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে যায়। সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হন শতাধিক কাশ্মীরবাসী। তাঁদের দাবির ওপর ভিত্তি করেই এবার শ্রীনগরের বিভিন্ন জেলা থেকে ১৭৭ জন কাশ্মীরি শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
বিগত কয়েকদিন ধরে জঙ্গি হামলায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন একের পর এক মানুষ। সরকারি দফতরে ঢুকে কাশ্মীরি পন্ডিত তথা সরকারি কর্মচারী রাহুল ভাটকে খুন করা হয়। এই নির্মম হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভূস্বর্গ। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলাগাম জেলায় জঙ্গিদের হাতে নিহত হন এক শিক্ষিকা। তিনিও কাশ্মীরি পন্ডিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সবমিলিয়ে নিরাপত্তার দাবিতে রাস্তায় নামেন কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একাংশ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-এর সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। লাগাতার সন্ত্রাসের হাত থেকে পরিযায়ী শ্রমিক ও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কীভাবে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়, ১৭৭ জন কাশ্মীরি শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে।
প্রসঙ্গত, কাশ্মীরি পন্ডিত রাহুল ভাটের হত্যাকান্ড কাশ্মিরবাসীর প্রতিবাদী সত্তাকে আরও বেশি করে জাগ্রত করে। তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন প্রায় ৬ হাজার কর্মী। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় বিক্ষোভ। নিরাপত্তা মজবুত করতে বদলির দাবিতে সরব হন তাঁরা। এরপরেও জঙ্গি হামলা কমা তো দূরের কথা, খুনের ঘটনা ক্রমশই প্রকট হতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার ফের রক্তাক্ত হয়ে ওঠে ভূস্বর্গ। জঙ্গি হামলায় প্রাণ দেন দুই ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মী এবং অপরজন ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক। জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন তাঁরা। গত মাসের প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত সব মিলিয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন ৯ জন।
Facebook Comments