জরায়ুমুখের ক্যানসার বা সার্ভিক্যাল ক্যানসার রুখতে প্রথম টিকা তৈরি হল ভারতে। সার্ভিক্যাল ক্যানসার ঠেকানোর দু’রকম টিকা দেশের বাজারে পাওয়া যায়। তবে ওই দুটি টিকাই বিদেশে তৈরি। এই প্রথমবার দেশের কোম্পানি টিকা তৈরি করল। সেই টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট দেখে ছাড়পত্রও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। জরায়ুমুখের ক্যানসার ঠেকানোর টিকা তৈরি করেছে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। এই টিকার নাম কোয়াড্রিভ্যালেন্ট হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (Quadrivalent Human Papillomavirus vaccine (qHPV)) । তিন পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে এই টিকায় অনুমতি দিয়েছে ডিজিসিআই।
সেরামের একজন শীর্ষ আধিকারিক প্রকাশ কুমার সিং বলছেন, CERVAVAC ভ্যাকসিন জরায়ুমুখের ক্যানসার সারাতে ১০০০ গুণ বেশি ভাল কাজ করবে। এই ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম বলে দাবি করেছেন সেরামের বিজ্ঞানীরা।
কেন জরায়ুমুখে ক্য়ানসার হয়?
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) (Human papillomavirus infection)-এর সংক্রমণে এই ক্যানসার হয়। জরায়ুর নীচের অংশ যোনির সঙ্গে যুক্ত, সংক্রমণ হয় এখানেই। তবে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ছাড়াও সারভাইকাল ক্যানসারের আর একটি প্রধান কারণ অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক। সাধারণত ভারতে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সিরাই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বয়স ৬০ পেরলেও এটি হতে পারে, তবে সংখ্যা তুলনামূলক কম।
এইচপিভি ভাইরাস শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভেঙে তছনছ করে দেয়। বহুদিন অবধি টিকে থাকতে পারে এই ভাইরাস। জরায়ুর কোষের অস্বাভাবিক বিভাজন ঘটিয়ে ক্যানসার তৈরি করতে পারে (HPV Vaccine)। দীর্ঘ সময় ধরে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কে বা একাধিক সম্পর্কে থাকলে জরায়ু-মুখের কোষগুলি পরিরর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনই ক্যানসারকে ডেকে আনে। অনেকক্ষেত্রেই যোনিতে সংক্রমণ হলে, লজ্জা ও অস্বস্তির কারণে রোগ এড়িয়ে যান মহিলারা। ডাক্তারের কাছে যেতে দেরি হয়। ফলে চিকিত্সাও দেরিতে শুরু হয়। ক্যানসার তার অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তাই সচেতনতা সবচেয়ে আগে দরকার।
সেরামের কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা বলছেন, এই টিকা বাজারে এলে বিদেশের উপর নির্ভরশীলতা অনেকটাই কমবে। এখন বাজারে যে টিকা পাওয়া যায়, তার দাম অনেক বেশি। ভারতে তৈরি টিকা বাজারে এলে দামও কমবে বলেই আশা।
Facebook Comments